নিজস্ব প্রতিনিধি, কক্সবাজার : টানা তিন দিনের ছুটিতে পর্যটকের ঢল নেমেছে কক্সবাজারে। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত এবারের থার্টি ফার্স্ট নাইটে কোনো আয়োজন ছিল না। তারপরও হোটেল-মোটেলগুলোতে ঠাঁই মিলছে না। ২০২০ সালের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে এবং সৈকতের অপরূপ বালিয়াড়ি ও উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গে সময় কাটাতে সমুদ্রসৈকত ছুটে আসেন দেশি-বিদেশি পর্যটক।
শনিবার (১ জানুয়ারি) সৈকতে সমবেত হয় প্রায় দুই লাখ পর্যটক। কাল রোববার এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
সকালে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে দেখা যায়, হাজার হাজার পর্যটক সৈকতে নেমে গোসল করছেন। আরও কয়েক হাজার বালুচরে দৌড়ঝাঁপে ব্যস্ত। কেউ দ্রুতগতির জেডস্কি ও স্পিডবোট নিয়ে নীলজলের বিশাল সমুদ্রে পাড়ি জমাচ্ছেন। আবার কেউ মুগ্ধ হচ্ছেন ছেলেমেয়েদের ঢেউয়ের তালে সার্ফিং দেখে। এ ছাড়া পর্যটকদের বিনোদনের জন্য সৈকতে বিচ বাইক, প্যারাসেইলিং, শিল্প ও বাণিজ্য মেলাসহ নানা আয়োজন তো আছেই।
মহামারীতেও পর্যটকরা ভিড় জমান কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত, প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন, টেকনাফ, শাহপরীর দ্বীপ, ইনানি, হিমছড়ি, রামুর বৌদ্ধপল্লী, চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, মহেশখালীর আদিনাথ, সোনাদিয়াসহ পুরো কক্সবাজারের পর্যটন স্পটে।
থার্টিফার্স্ট নাইট ঘিরে পর্যটন শহরের সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও কটেজ ছিল পরিপূর্ণ। পাশাপাশি ট্যুরিস্ট পুলিশ পর্যটকদের নিরাপত্তার প্রস্তুতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
অন্যদিকে, করোনার সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সৈকতে নামতে পর্যটকদের সচেতন করার ব্যবস্থাও ছিল কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের।
প্রতিবছর ইংরেজি পুরনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে কক্সবাজারে ব্যানার-ফেস্টুন দিয়ে সাজানো হয় সব হোটেল ও মোটেল। কিন্তু এ বছর তা চোখে পড়েনি। তবে করোনা মহামারীতে হোটেল-মোটেলে পর্যটকের সমাগম ছিল উল্লেখযোগ্য।
ঢাকা থেকে আসা দম্পতি তারেক ও রোকসানা জানান, করোনার মহামারীতে দীর্ঘ সময় বাসার বাইরে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। তাই কক্সবাজার ঘুরতে এসেছি। তিনি বলেন, থার্টিফার্স্ট নাইট উপলক্ষে বাড়তি কোনো আয়োজন না থাকলেও পরিবারের সঙ্গে ভালো সময় কাটাচ্ছি।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, করোনার মাঝেও এবার হোটেল রিজার্ভেশনের পরিমাণ খুবই ভালো ছিল। বেশিরভাগ বুকিং ছিল কয়েক মাস আগের।
এদিকে, থার্টিফার্স্ট নাইটের আয়োজন না থাকলেও সমুদ্রে উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গে পর্যটকের আনন্দ ভাগাভাগিতে কমতি ছিল না। তবে সমুদ্র গোসলে লাইফগার্ড কর্মীদের পাহারা ছিল প্রশংসনীয়।
কক্সবাজারের টুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার চৌধুরী মিজানুজ্জামান বলেন, কলাতলী থেকে শুরু করে ডায়াবেটিস পয়েন্ট পর্যন্ত ট্যুরিস্ট পুলিশ সক্রিয় ছিল। পাশাপাশি ছিল মোবাইল ও রেসকিউ টিম।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আল আমিন পারভেজ বলেন, থার্টিফার্স্ট নাইট কেন্দ্র করে আসা পর্যটকদের সৈকতে নামার সময় মাস্ক ও স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তার পাশাপাশি হয়রানি রোধে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে নামানো হয়েছে।
সান নিউজ/কেটি