সান নিউজ ডেস্ক:
করোনাভাইরাস আতঙ্কে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে সারাদেশে। বিভিন্ন স্থানে জোরদার করা হয়েছে সেনাবাহিনীর টহল। মাস্ক ছাড়া রাস্তায় বের হলে কান ধরে উঠবস করাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বন্ধ রয়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ দোকান-পাট।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা এক ব্যক্তি মারা গেছেন। করোনাভাইরাস সংক্রামণ প্রতিরোধে জনসমাগম এড়াতে জেলায় সেনাবাহিনীর টহল আরও জোরদার করা হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে দোকানপাট।
জনশূন্য হয়ে পড়েছে ময়মনসিংহ নগরীর সড়ক-মহাসড়ক ও হাট-বাজার। সড়কে নেই কোন যানবাহন। প্রয়োজন ছাড়া বেড় হচ্ছেন না কেউ। যারা মাস্ক ছাড়া রাস্তায় বের হয়েছেন তাদের কান ধরে উঠ-বস করাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে বান্দরবানের লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি এই তিন উপজেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। ওষুধ, কাঁচাবাজার ও নিত্যপণ্য ছাড়া সব দোকান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি চালু থাকলেও বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) থেকে তা বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতদিন ইমিগ্রেশন বন্ধ থাকলেও চালু ছিল আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। ট্রাক চালক ও হেলপাররা কোন ধরনের বাঁধা ছাড়া আসা-যাওয়া করছিলো। তাদের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়ায় কি না, তা নিয়ে স্থানীয়রা ছিল আতঙ্কিত।
শরীয়তপুরের শিবচরের চারটি গ্রামে পুলিশের অনুমতি ছাড়া প্রবেশ ও বাহির হওয়া বহাল আছে। বন্ধ রয়েছে জেলার বেশিরভাগ দোকান। দেশের প্রথম লকডাউন এলাকা হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক একটু বেশি।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষায় নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ও ওষুধের দোকান ছাড়া মংলায় সকল প্রকারের দোকান, মার্কেট বন্ধ রেখেছে ব্যবসায়ীরা। তবে মংলা বন্দরের বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য খালাসের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।
অন্যদিকে, ঠাণ্ডা ও জ্বর নিয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি এক শিশুকে করোনা সন্দেহে আইসোলেশন ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছে। শিশুটির বয়স মাত্র ৭ মাস। তার বাবা গত ৯ র্মাচ সিঙ্গাপুর থেকে ফিরে পরিবারের সাথে ছিলেন। এ ঘটনার পর পলাতক থাকা বাবাকে ধরে এনে পরিবারের ৫ সদস্যের সাথে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
শিশুটিকে ভর্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) তাপস কুমার সরকার বলেন,‘ নানা সমস্যা নিয়ে শিশুটি হাসপাতালে আসে। ২৩ মার্চ জ্বর, ঠাণ্ডা নিয়ে হাসপাতালে আসার পর তাকে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। হামও হয়েছে তার। এরপর আজ সকালে থেকে তার অবস্থার অবনতি হয়।'
তাপস কুমার আরও জানান, 'শিশুটির বাবা বিদেশ থেকে আসার খবর পরিবারটি গোপন করেছিল। বিষয়টি জানার পরই করোনা সন্দেহে আইসোলেশন ওয়ার্ডে তাকে নেয়া হয়েছে। নিউমোনিয়াসহ অন্যান্য অসুখের কারণে তার চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। বিষয়টি আইইডিসিআরকে জানানো হয়েছে। তার নমুনা সংগ্রহ করার জন্য। তবে ওই পরিবারের বাকিরা সবাই সুস্থ আছেন।'
সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সারা দেশে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। সাধারণ মানুষও রাস্তায় বের হচ্ছে কম। এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন অনেকে। করোনা প্রতিরোধে এ ধরনের কার্যকর ব্যবস্থা আরও আগে থেকে নেয়া উচিৎ ছিল বলে মনে করেন সচেতন মহল।