ফয়সল চৌধুরী, হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ে ভুলের খেসারত দিল আওয়ামী লীগ। শুধু তাই নয় বর্তমান মেয়র ছালেকের লাগামহীন দুর্নীতি এবং বিদ্রোহী প্রার্থী দমনে ব্যর্থতার কারণেই ভরাডুবি হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। যার ফলে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ফরিদ আহমেদ অলি ধানের শীষ প্রতীকে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রাপ্ত ভোট ৪০৪১। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মো. মাসুদউজ্জামান মাসুক নৌকা প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৩১৪১ ভোট।
নিবার্চনে ছয় প্রার্থীর মধ্যে চার মেয়র প্রার্থীই ছিল আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী। তাদের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৬ হাজার ৬১ ভোট।
সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে ফলাফল ঘোষণা করেন জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম।
মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে অন্যান্যরা ভোট পেয়েছেন-স্বতন্ত্র বর্তমান মেয়র মোঃ ছালেক মিয়া নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৫৯৯ ভোট, স্বতন্ত্র ফজল উদ্দিন তালুকদার চামচ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১৫১০ ভোট, স্বতন্ত্র আবুল কাশেম শিবলু জগ প্রতীকে পেয়েছেন ১৪৩০ ভোট ও ইমদাদুল ইসলাম শীতল মোবাইল ফোন প্রতীকে পেয়েছেন ৫২২ ভোট।
কাউন্সিলর হিসেবে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা হলেন-১নং ওয়ার্ডে মোঃ রজব আলী (উটপাখি), ২নং ওয়ার্ডে মোঃ আবদুল জলিল (উটপাখি), ৩নং ওয়ার্ডে মোঃ মাসুক মিয়া (পাঞ্জাবি), ৪নং ওয়ার্ডে জালাল উদ্দিন মোহন( পাঞ্জাবি), ৫নং ওয়ার্ডে মোঃ আব্দুল গফুর (পানির বোতল), ৬নং ওয়ার্ডে ফাহিন হোসেন (পাঞ্জাবি), ৭ নং ওয়ার্ডে মোঃ তাহির মিয়া( উটপাখি), ৮নং ওয়ার্ডে আব্দুল আহাদ (পাঞ্জাবি), ৯নং ওয়ার্ডে আব্বাস উদ্দিন তালকদার (পানির বোতল)।
সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর হিসেবে যারা নির্বাচিত হয়েছেন ১,২,৩ নং ওয়ার্ডে আছমা আক্তার কলম প্রতীকে ১২৩২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ৪,৫,৬নং ওয়ার্ডে তফুরা খাতুন চশমা প্রতীকে ১৮৯৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, ৭,৮,৯, ওয়ার্ডে আফসানা ডলি ১৪৮৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
মোট ১৮ হাজার ৩৫ ভোটের মধ্যে ১৩ হাজার ২২৪ ভোট কাস্টিং হয়েছে। যা শতকরা ৭৩ দশমিক ৬৭ ভাগ।
এদিকে, এই পৌরসভায় প্রথমবারের মত ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোট প্রদানে ভোটারদের কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। তাছাড়া সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ সম্পূর্ণ হয়েছে। দুই একটি ভোট কেন্দ্রের বাইরে উৎসুক জনতার মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা হলেও ভোট গ্রহণে কোন বাঁধা সৃষ্টি হয়নি বলে জানালেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা।
সরেজমিনে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে ঘুরে দেখা গেছে, ভোটারদের উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। এক্ষেত্রে নারী ভোটাদের উপস্থিতি বেশি ছিল ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন পর সুন্দর পরিবেশে তারা ভোট প্রদান করেছেন। ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করায় কোন জাল ভোট কিংবা কারচুপির সুযোগ ছিল না। তবে ইভিএমে আঙ্গুলের ছাপ না মিলাতে বিড়ম্বনায় পড়েন অনেক ভোটার।
সান নিউজ/এফসি/এনকে