দিনাজপুর প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের বিরলে রুপালী বাংলা জুট মিলে বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলনকারী শ্রমিকের ওপর পুলিশের গুলিতে এক পান দোকানদার নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে ।
নিহত পান দোকানদারের নাম সুরত আলী (৪০)। তিনি বিরল পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের হুসনা গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে।
বুধবার (২৫ মার্চ) বিরল থানার ওসি শেখ নাসিম হাবিব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
এ ঘটনায় মিলের তিন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। পুলিশের লাঠিচার্জে কমপক্ষে আরও ১৫ শ্রমিক আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ দুইজনকে বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং একজনকে দিনাজপুরের এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শ্রমিক রাজ কুমার, রায়হান ও ইব্রাহীম। এদের মধ্যে রাজ কুমারকে দিনাজপুরের এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং রায়হান ও ইব্রাহীমকে বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, মিলের মালিক বিরল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ। করোনার কারণে মিল বন্ধ হয়ে যাবে এমন খবরে বিকেল থেকে শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করেন। এ সময় মিল কর্তৃপক্ষ পুরো বকেয়া বেতন দিতে গড়িমসি শুরু করে। শ্রমিকদের কারও চার সপ্তাহের কারও তিন সপ্তাহের বেতন বকেয়া ছিল।
মিল কর্তৃপক্ষ ৫ দিনের বেতন দিতে চাইলে শ্রমিকরা মিল বন্ধের আগে পুরো বকেয়া বেতন দাবি করে। এ নিয়ে মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে এক পর্যায়ে মালিক পক্ষ কোনো বেতন দেবে না বলে জানালে শ্রমিকরা রাত ৮টার দিকে মিলে ভাঙচুর শুরু করে।
এসময় মালিক পক্ষ পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পুলিশ গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই সুরত আলী গুলিবিদ্ধ হন।
গুলিতে আহত সুরত আলীকে বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি মেডিকেল অফিসার ডা. তানজিমুল হক জানান, হাসপাতালে আনার আগেই সুরত আলী মারা যান। তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছররা গুলি লাগে। এতে তিনি মারা যান।
বিরল থানার ওসি শেখ মোঃ নাসিম হাবিব জানান, বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর আক্রমণ করায় বাধ্য হয়ে প্রথমে লাঠিচার্জ, পরে ৩ রাউন্ড টিয়ার শেল এবং শেষে ১২ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়। বিক্ষোভকারীদের হামলায় ৩ পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন বলেও জানান তিনি।
সান নিউজ/সালি