নিজস্ব প্রতিনিধি রংপুর : পেশায় নাপিত এক যুবককে বিয়ে করেছেন এক নারী চিকিৎসক। আইনি প্রক্রিয়ায় আগের স্বামীকে ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। নতুন সংসারে সুখেই আছেন বলে জানিয়েছেন। তবে গণ্ডগোল বেধেছে তার বাবার দায়ের করা এক মামলায়। গ্রেপ্তার হতে হয়েছে তার স্বামীকে। বেধেছে বিপত্তি। সংসারের বদলে তাকে থাকতে হচ্ছে কারাগারে।
রংপুর নগরীর সেনপাড়ার বাসিন্দা ওই নারী পেশায় গাইনী চিকিৎসক। ভালোবেসে পেশায় নাপিত এক যুবককে বিয়ে করার পর ২১ মাস ধরে ঢাকার মোহাম্মদপুরে চাঁন মিয়া হাউজিংয়ে স্বামী ও এক শিশু সন্তান নিয়ে বসবাস করছিলেন।
কিন্তু ওই নারীর বাবার করা অপহরণ মামলায় ২১ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে তাকে উদ্ধার এবং তার স্বামীকে গ্রেপ্তার করে রংপুর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরদিন রংপুর নগরীর কেরানীপাড়ায় সিআইডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তাদের হাজির করা হয়। সিআইডির পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাস ওই সংবাদ সম্মেলন করেন।
এই দম্পতিকে সংবাদ সম্মেলনে এভাবে হাজির করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভিন্নজন। শুধু নাপিত পেশার যুবককে বিয়ে করায় সিআইডির পুলিশ সুপার ওই সংবাদ সম্মেলন করেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়।
তবে পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাস বলেন, পুলিশ যা করেছে ঠিক করেছে। উনি ভালো চিকিৎসক। যাকে তিনি বিয়ে করেছেন তিনি লেখাপড়া জানেন না। চিকিৎসকের বাবার ফুটফরমাশ খাটতেন। চিকিৎসকেরও কাজে সাহায্য করতেন। স্বাধীনতা মানে যা ইচ্ছা তা করা নয়। চিকিৎসকের বাবার কথা ভাবতে হবে। তিনি এত কষ্ট করে মেয়েকে বড় করেছেন।
রোববার পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাস জানান, গত বছরের মার্চে রংপুর নগরীর এক ব্যবসায়ী তার গাইনী চিকিৎসক মেয়ে (৩৪) অপহৃত হয়েছে মর্মে তার মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন- নগরীর আলমনগর কলোনীর এক নাপিত (৩৫) তার মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে।
এ ঘটনায় দীর্ঘদিন পুলিশ চেষ্টা করেও অপহৃত চিকিৎসককে উদ্ধার করতে পারেনি। পরে মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডি পুলিশের কাছে দেওয়া হয়।তিনি জানান, সিআইডি পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ইউনুছ দীর্ঘ দিন ধরে অনুসন্ধান চালিয়ে ওই চিকিৎসককে গত ২১ ডিসেম্বর রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার চান মিয়া হাউজিংয়ের একটি বাসা থেকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। পরে আদালতে হাজির করা হলে ওই যুবককে কারাগারে পাঠান বিচারক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই নারী চিকিৎসক তার আগের স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে ওই যুবককে বিয়ে করেন। আগের স্বামীর ঘরের একটি পুত্র সন্তান এবং এই ঘরে একটি সন্তান রয়েছে।। এর আগেও তারা একবার পালিয়েছিলেন। অনেক বুঝিয়ে মেয়েটিকে বাড়িতে আনা হলেও আবার তারা পালিয়ে যান। ওই যুবক নারী চিকিৎসকের বাবার ব্যবসায় ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করতেন।
সিআইডির পুলিশ সুপার বলেন, ওই নারী জানিয়েছেন নতুন বিয়ে করে তারা সুখেই আছেন। তার বাবা তাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন।
সান নিউজ/পিডিকে