নিজস্ব প্রতিনিধি, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) : গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে শাহাদুল ইসলাম হত্যার আসামিদের গ্রেফতার ও দ্রুত বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
রোববার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের কারেন্ট বাজারে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করেন। এতে তিন শতাধিক নারী পুরুষ অংশ গ্রহন করে। মানববন্ধন চলাকালিন সময়ে বক্তব্য রাখেন বাবুল আকতার, বাচ্ছু মিয়া, নাছিমা বেগ প্রমুখ। বক্তাগণ অবিলম্বে হত্যা মামলার বাকী আসামি গ্রেফতারসহ দ্রুত ফাঁসির আদেশ কার্যকর করার দাবি জানান।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৭ জুলাই উপজেলার দূর্গম চরাঞ্চল চর মাদারীপাড়া গ্রামের কারেন্ট বাজারে। থানা পুলিশ ও স্বজন এবং স্থানীয়দের নিকট থেকে জানা গেছে দীর্ঘদিন থেকে শাহাদুল ইসলাম তার বন্ধু ওই গ্রামের শফিকুল ইসলাম, ফরিদুল ইসলাম, মাসুদ মিয়া, ও চান্দ মিয়ার সাথে চলাফেরা করত। শাহাদুলের বাড়ি সংলগ্ন একটি জমি শফিকুল নিতে চেয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে ওই জমিটি শাহাদুল ক্রয় করে। এ নিয়ে শফিকুলের সাথে শাহাদুলের মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়।
এরই জের ধরে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক শফিকুলের কথিত প্রেমিকা রহিমা বেগম ফেলানি বেগম মোবাইল ফোনে শাহাদুলকে তার বাড়িতে ডেকে নেয়। রাতে শাহাদুল বাড়িতে না ফিরলে এবং মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় পরদিন ১৮ জুলাই তার স্ত্রী নাছিমা কারেন্ট বাজারে শফিকুলের দোকানে গিয়ে স্বামীর কথা জিজ্ঞাস করলে উল্টাপাল্টা কথাবার্তা বলে। ম্বামীর সন্ধান না পেয়ে ২৬ জুলাই থানায় জিডি করে (জিডি নং-১১১২) নাছিমা। এ নিয়ে একাধিক বার থানায় মামলা করতে গেলে সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকায় মামলা নেয়া হয়নি।
এরপর মোবাইল ফোনের সিডিআর তালিকা থেকে ফেলানি বেগমের মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে গত ৮ নভেম্বর শফিকুলকে এবং একদিন পর ফেলানিকে আটক করে জিজ্ঞাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ফেলানি জানান শফিকুলের নির্দেশ মোতাবেক তিনি শাহাদুলকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে আসে। এরপর তার সামনে তিন বন্ধু মিলে তাকে হত্যা করে লাল নদীতে ভাসিয়ে দেয়। ফেলানি যাতে বিষয়টি প্রকাশ না করে সে জন্য তাকেও হত্যার হুমকি দেয়।
পুলিশ আসামি শফিকুল ইসলাম ও ফেলানি বেগমকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয় এবং শফিকুলকে ৫ দিনের এবং ফেলানিকে ৩ দিনের রিমান্ডে নেয় মামলা তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই মোজাম্মেল হক। রিমান্ডে ফেলানি ও শফিকুল শাদাদুলকে হত্যার কথা স্বীকার করে। এনিয়ে ১৪ নভেম্বর শাহাদুলের স্ত্রী নাছিমা বেগম বাদী হয়ে থানায় হত্যা করে।
সুন্দরগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত ) বুলবুল ইসলাম জানান অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের জোর চেষ্টা চলছে।
সান নিউজ/আরআই/এস