নিজস্ব প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ : সকাল থেকে রাত নয়টা অবধি উৎসবের মেজাজ। বছরের শেষ দিকে একটা পিকনিক বা ডে আউটে পুরাতন বছরকে বিদায় জানানোর প্রয়াস মাত্র। নতুন বছর শুরু পাঁচদিন আগেই পুরাতনকে বিদায় জানাতে যাবতীয় প্রস্তুতি।
একদিকে করোনায় কর্মময় জীবনের শৈথিল্য, অন্যদিকে সরকারি ছুটির দিন। সর্বোপরি শনিবার ছিল গোপালগঞ্জের মার্কেট হলিডে। অনেক বন্ধু ব্যবসায়ী তাইতো বন্ধের দিনে এই আয়োজন।
তাইতো বছরের শেষে কর্মময় শৈথিল্যের ফাঁকে, গোপালগঞ্জ শহরের এস এম মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯৪ সালের এসএসসি ব্যাচের অর্ধশতাধিক বন্ধু একত্রিত হয়। শহরের চৌরঙ্গী থেকে একযোগে রওনা হয় গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উলপুর জমিদার বাড়ির উদ্দেশ্যে। সেখানে বেশ ঘোরাঘুরি শেষে হাজির এসএম মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদের সংগঠন জেমসার সাধারণ সম্পাদকের বাড়ি।
সাধারণ সম্পাদক মৃনাল কান্তি রায় চৌধুরী(পপা)সবার সঙ্গে করমর্দন করে স্বাগত জানান। তার বাড়িতে নির্মাণাধীন প্রবীণ নিবাস ঘুরিয়ে দেখান। দেখান সুইমিংপুল আদলে তৈরী পুকুর ও আশপাশ এলাকা।এরই মধ্যে আবদার করেন দুপুরের খাবার গ্রহণের। তাকে আর না বলার সাহস কেউ করলো না।এদিন ঘোরাঘুরির তালিকায় ছিল নদী, বিল,জঙ্গল, ক্যানেল । শীতের এই ছোট বেলায় এর চেয়ে আর বেশী সম্ভব ছিলনা।অনেকে আবার শানবাঁধানো পুকুরপাড়ে মাদুর বিছিয়ে শুরু করে তাস খেলা।এরই ফাঁকে ভ্রমণ দলের এক বন্ধু ডাক্তার ইফতেখার আলম উলপুর গ্রামের মন্নান মোল্ল্যা নামে এক বৃদ্ধকে ফ্রি চিকিৎসা দেন।
কেউ বা হৈ-হুল্লায় মেতে উঠে আবার কেউ সেলফি তুলতে ব্যস্ত।অনেকে দলবেঁধে ক্যামেরা ফ্রেমে বন্ধি হতে ব্যস্ত। এরপর খাওয়া দাওয়া শেষে ফিরে আসা ইট পাথরের গড়া সেই শহরে।তখন সন্ধ্যা নেমেছে। বটতলায় রাজিবের দোকানে বসে আবার শুরু হলো চায়ের আড্ডা।
এরপর রাত ৮টায় শহরের বিণাপাণি স্কুল মোড়ের একটি রেষ্টুরেন্টে বসে চলে সুপ আর অনথনের আড্ডা।খাওয়া দাওয়া, গল্প ও পুরাতন দিনের স্মৃতিকথার উৎসবে মেতে থাকে বন্ধুরা।
এ ব্যপারে কাজী মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, বছরের শেষ। এছাড়া করোনার কারণে ছেলে মেয়েদের স্কুল বন্ধ। তাদের রিক্রিয়েশনের জন্য গ্রামের বাড়িতে এসেছি। অধিকাংশ বন্ধুবান্ধব এখন কর্মস্থল ছেড়ে বাড়িতে এসেছে। এই সুযোগে মডেল স্কুলের ৯৪ ব্যাচের অর্ধশতাধিক বন্ধু এক হয়ে পুরানো স্মৃতিকে ঝালাই করলাম। সেই সঙ্গে পুরো একটা দিন প্রকৃতির সঙ্গে থাকতে পারলাম, মজা করলাম।
অপর বন্ধু নাজমুল হুদা কলিন্স বলেন, শত ব্যস্ততার কারণে বন্ধুদের ডাকে খুলনা থেকে চলে এসেছি। কর্মজীবনে প্রবেশের পর অনেকের সঙ্গে দেখা হয়নি। আজ বহু দিন পর তাদের সঙ্গে দেখা হলো। খুব ভালো লাগলো। সারাটা দিন সেই ছাত্রজীবনের মেজাজে ছিলাম।
একই ধরনের অভিব্যক্তি করেছেন, সমীর আইচ, শেখ খালিদুল আমিন, সঞ্জয় ওঝা, আলী নাঈম খান জিমি, আনোয়ারুল হক বনি, শেখ রাজিবুর রহমান, পবিত্র বিশ্বাস, ইলতুত মিশ, মোহসিন উদ্দিন সিকদারসহ বেশ কয়েকেজন। তারা জানিয়েছেন, সারাটা দিন খুব আনন্দ উল্লাস করলাম। পুরানোকে তুলে ধরলাম। দিনটিকে স্মৃতিময় করতে নিজেদের ক্যামেরা বন্ধী করলাম। সকল বন্ধুদের এভাবে বছরের একটি সময়ে একত্রিত হয়ে পুরানোকে তুলে ধরা উচিৎ।
সান নিউজ/বিকে/এনকে/এস