এম. আমান উল্লাহ, কক্সবাজার : সনাতন পদ্ধতি ছেড়ে আধুনিক পদ্ধতিতে শুঁটকি উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রক্রিয়াকরণ শিল্প কেন্দ্র স্থাপন করছে সরকার। কক্সবাজারের বিভিন্ন শুঁটকি মহলে গড়ে ওঠা এই শিল্প নেয়া হচ্ছে একটি বিশেষ অঞ্চলে। সরকারের এমন উদ্যোগে খুশি শুঁটকি মহাল মালিক ও ব্যবসায়ীরা।
শুঁটকি ব্যবসায়ীরা বলেছেন, আধুনিক পদ্ধতিতে উৎপাদিত শুঁটকির মান বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কমবে শুঁটকি মহলের জমির ব্যবহারও। তবে সব মহালকে এক জায়গায় স্থান দিতে প্রকল্পের জমির পরিমাণ বাড়ানোর দাবি করেছেন তারা। পাশাপাশি প্রকল্প এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নিশ্চিতের দাবি তাদের।
বিমানবন্দর সম্প্রসারণের জন্য নাজিরাটেকসহ আশপাশের এলাকার জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তাই খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশেই স্থাপন করা হচ্ছে শুঁটকি উৎপাদনের এই আধুনিক কেন্দ্র।
সম্প্রতি ১৯৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয় ধরে ‘শুঁটকি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প কেন্দ্র স্থাপন’- শীর্ষক প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায়। তবে সেখানে জমি কম হওয়ায় সব মহাল স্থানান্তর করা যাবে কিনা সংশয়ে আছেন ব্যবসায়ীরা।
দেশের সবচেয়ে বড় শুঁটকি মহাল কক্সবাজারের নাজিরারটেকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাঁচা মাছ শুকিয়ে শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সেখানকার শ্রমিকরা। এখানকার চারশো মহালে প্রতি মৌসুমে উৎপাদন হয় প্রায় ১ লাখ মেট্রিক টন শুঁটকি।
নাজিরারটেকের শুঁটকি উৎপাদনকারী ব্যবসায়ী ও মহল মালিকরা বলেন, যে আধুনিক পদ্ধতিতে শুঁটকি উৎপাদনে সরকার উদ্যোগ নিচ্ছে, সেটি বাস্তবায়ন হলে এখনকার ব্যবসায়ীদের জন্য ভাল হবে। শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারলে সরকারের যে কোনো উদ্যোগে তাদের আপত্তি নেই। তবে প্রকল্প এলাকায় বিশুদ্ধ পানি, সড়ক যোগাযোগ ও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতি।
নাজিরারটেক মৎস্য ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতি অর্থ সম্পাদক আতাউর রহমান কায়সার বলেন, শুঁটকি মহাল স্থানান্তরিত হলে সেখানে আমাদের চারটি মৌলিক দাবি থাকবে। প্রথমত সেখানকার আইন-শৃঙ্খলার দিকে সরকারকে নজর দিতে হবে। এরপর প্রকল্পে বিদ্যুৎ, যোগাযোগের জন্য উন্নত সড়ক ব্যবস্থা ও পানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মো. এহছানুল হক জানান, ১৯৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের কাজ নতুন বছরের (২০২১ সালের জানুয়ারি) প্রথমেই শুরু হবে। এখনও প্রকল্প এলাকার মাটি ভরাটের কাজ সম্পন্ন হয়নি।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, তিন বছর মেয়াদের এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে। এটি বাস্তবায়িত হলে পরিবর্তন আসবে দীর্ঘ ৪০ বছরের শুঁটকি উৎপাদনের প্রক্রিয়ায়।
সান নিউজ/কেটি/এস