নিজস্ব প্রতিনিধি, নোয়াখালী : স্বামী বিদেশে থাকায় অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি প্রকাশের হুমকি দিয়ে প্রবাসীর স্ত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে রাকিবুল হাসান রাকিব (২২) নামে এক যুবক। ঘটনাটি ঘঠেছে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে।
শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করলে প্রধান অভিযুক্ত রাকিবের মা রুনা বেগমকে (৫০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত রুনা বেগম চরফকিরা ৫নং ওয়ার্ডের বারিক ক্যাপ্টেন বাড়ির জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত চার বছর আগে এক প্রবাসীর সঙ্গে নির্যাতিতা নারীর বিয়ে হয়। তাদের সন্তানের জন্ম হওয়ার পর বিদেশে চলে যায় গৃহবধূর স্বামী। অভিযুক্ত রাকিব তাদের একই বাড়ির বাসিন্দা ও ওই নারীর ভাসুরের ছেলে। এ সম্পর্কের কারণে গৃহবধূদের ঘরে আসা যাওয়া ছিল রাকিবের।
ঘরে আসা যাওয়ার কোনো এক সময় গৃহবধূর অজান্তে তার ব্যবহৃত মোবাইল থেকে তাদের স্বামী-স্ত্রীর একান্ত মুহূর্তের কিছু অন্তরঙ্গ ছবি নিজের মোবাইলে নিয়ে যায় রাকিব। পরবর্তীতে ওই ছবিগুলো ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে একাধিকবার গৃহবধূকে ধর্ষণ করে রাকিব। ধর্ষিতা ঘটনাটি রাকিবের বাবা মাকে জানিয়ে কোন প্রতিকার পায়নি, বরং উল্টো তারা ধর্ষিতাকে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করে। নিজের সংসার ভেঙে যাওয়ার ভয়ে প্রবাসী স্বামীকে কিছুই জানাননি ওই গৃহবধূ।
গত ২২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গৃহবধূর শ্বশুরদের ঘরে কেউ না থাকার সুবাধে ঘরে আসে রাকিব। এসময় রাকিব গৃহবধূর কক্ষে ঢুকে তার শিশু বাচ্চাকে পানিতে ফেলে হত্যার হুমকি ও ছবিগুলো আজই ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবে বলে জোরপূর্বক আবারও ধর্ষণ করে।
একইদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে কৌশলে আবারও গৃহবধূর কক্ষে ঢুকে গৃহবধূকে পুনরায় ধর্ষণের চেষ্টা চালায় রাকিব। পরে রাকিবের সাথে গৃহবধূর ধস্তাধস্তির শব্দ পেয়ে পাশের কক্ষ থেকে পরিবারের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে। এসময় দ্রুত পালিয়ে গিয়ে এলাকা ছেড়ে আত্মগোপন করে রাকিব। গৃহবধূর শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে বাবার বাড়ির লোকজনের সহযোগিতায় ২৪ ডিসেম্বর তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহিদুল হক রনি বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ধর্ষণের অভিযোগে ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার ৩নং আসামিকে গ্রেপ্তার করে শনিবার দুপুরে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নির্যাতিতা নারীকে মেডিকেল টেস্টের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার মূলহোতা রাকিবকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।
সান নিউজ/এস