নিজস্ব প্রতিনিধি, বগুড়া : বগুড়ার ধুনটের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী মাহি উম্মে তাবাসসুমকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে এই হত্যার রহস্য উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান বগুড়া পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঁঞা।
এর আগে ১৪ ডিসেম্বর ধুনট উপজেলার একটি বাঁশঝাড় থেকে তাবাসসুমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত তাবাসসুমের বাবা-মা ঢাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন। সে তার দাদা-দাদির সঙ্গে নশরতপুর গ্রামে থাকতো।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ধুনট উপজেলার নশরতপুর গ্রামের তোজাম্মেল হকের ছেলে বাপ্পি আহম্মেদ, দলিল উদ্দীন তালুকদারের ছেলে কামাল পাশা, সানোয়ার হোসেনের ছেলে শামীম রেজা ও সাহেব আলীর ছেলে লাবলু শেখ।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঁঞা জানান, গ্রেফতার আসামি বাপ্পীর পরিবারের সঙ্গে শিশু তাবাসসুমের বাবা খোকনের দ্বন্দ্ব চলছিল। ঘটনার প্রায় তিন মাস আগে বাপ্পী তাবাসসুমকে হত্যা করে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে। এরপর গত ১৪ ডিসেম্বর তাবাসসুম তার দাদা-দাদী এবং দুই ফুফুর সঙ্গে ইসলামী জলসায় গেলে আসামিরা তাকে ধর্ষণের পর হত্যার পরিকল্পনা করে। জলসা চলাকালে রাত ৯টার দিকে আসামিরা তাবাসসুমকে বাদাম কিনে দেয়ার লোভ দেখিয়ে হাজী কাজেম জুবেদা টেকনিক্যাল কলেজে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। এ সময় তাবাসসুমের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে সে নিস্তেজ হয়ে যায়। পরে তাকে গলাটিপে হত্যা করা হয়।
এই ঘটনাকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য হত্যাকারীরা পরিকল্পনা করে। তাবাসসুমকে কোনো জন্তু জানোয়ার কামড়ে মেরে ফেলেছে এমনটি বোঝানোর জন্য হত্যাকারীরা কাটিং প্লাস দিয়ে তাবাসসুমের হাতের আঙ্গুল কেটে ফেলে। এবং লাশ মোকাম্মেলের বাড়ির দক্ষিণ পাশে বাদশার বাঁশ ঝাড়ে ফেলে রেখে যায় যাতে বাদশার ছেলে রাতুলকে সবাই সন্দেহ করে। এরপর বাপ্পী বাড়িতে চলে যায় এবং অন্য তিন আসামি জলসায় গিয়ে ভলেন্টিয়ারের দায়িত্ব পালন করে।
পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঁঞা আরও জানান, নিখোঁজের পর তাবাসসুমকে অনেক খোঁজাখুঁজি করা হয়। পরে তার লাশ বাঁশঝাড় থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসামিদের ৮ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
সান নিউজ/কেটি