নিজস্ব প্রতিনিধি, শরীয়তপুর : শরীয়তপুরের নড়িয়া পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে ৮ প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে দলীয় কার্যালয়ে দাখিল করেছেন। এর আগে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ৯ প্রার্থীর নামের তালিকা পাঠায় নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ। বৃহস্পতিবার দুপুরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন, নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাস্টার হাসানুজ্জামান খোকন।
দলীয় সূত্রে ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তৃতীয় ধাপে নড়িয়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন প্রদানের জন্য অতীতের ২ জন বিদ্রোহী প্রার্থীসহ ৯ জন প্রার্থীর নামের তালিকা কেন্দ্রে পাঠায় নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে রয়েছেন, শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক, শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির বারবার নির্বাচিত সভাপতি এ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ, নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র শহিদুল ইসলাম বাবু রাড়ী (আওয়ামী বিদ্রোহী), সাংগঠনিক সম্পাদক ও গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম (ভিপি চুন্নু,) শিক্ষা ও মানব সম্পদ সম্পাদক এবং উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান জাকির বেপারী, সদস্য ও সাবেক মেয়র হায়দার আলীর ছেলে মাহমুদুল হাসান জুয়েল (আওয়ামী বিদ্রোহী), পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর শেখ, নড়িয়া সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি মামুন মোস্তফা, সাবেক ছাত্রনেতা মিজানুর রহমান মিলন ফকির, নড়িয়া সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস রহুল ছৈয়াল। তবে সাবেক ছাত্রনেতা মিজানুর রহমান মিলন ফকির মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেনি।
এদিকে, তৃণমূল থেকে বিদ্রোহীদের নাম কেন্দ্রে পাঠানো এবং দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিল করায় এলাকায় দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
দলীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, গত নির্বাচনে নড়িয়া পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পায় আওয়ামী লীগ নেতা, তৎকালীন মেয়র প্রয়াত হায়দার আলী। আর বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল ইসলাম (বাবু রাড়ী) পরাজিত হয়। এতে নড়িয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে বহিস্কৃত হয় বাবু রাড়ী।
নির্বাচনে হায়দার আলী বিজয়ী হয়। পরে হায়দার আলীর মৃত্যুর পর উপ-নির্বাচনে আবার দলীয় মনোনয়ন পায় নড়িয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সিরাজুল ইসলাম (ভিপি চুন্নু)। তাতে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে শহিদুল ইসলাম বাবু রাড়ী বিজয়ী হয়। পরে মেয়র বাবু রাড়ী নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে বিভিন্ন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সাথে লবিং ও তদবির করে উপজেলা আওয়া মীলীগের ১নং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হয়।
এছাড়াও নড়িয়া পৌরসভায় উপ-নির্বাচনে প্রয়াত মেয়র হায়দার আলীর পুত্র, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুল হাসান (জুয়েল) বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে। আর সম্মেলনে মাহমুদুল হাসান (জুয়েল)’কে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হয়।
এ ব্যাপারে নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাস্টার হাসানুজ্জামান খোকন বলেন, আমরা ৯ জন মনোনয়ন প্রত্যাশীর নাম কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। এর মধ্যে ৮ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিল করেছেন। আমরা দলের নেতা হিসেবে সকলের নাম পাঠিয়েছি। বিদ্রোহীদের ব্যাপারে কেন্দ্রের কোনো চিঠি আমরা হাতে পাইনি। তাই রানিং মেয়র হিসেবে শহিদুল ইসলাম বাবু রাড়ী’র নামও পাঠিয়েছি।
এ ব্যাপারে শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে বলেন, পৌর আওয়ামী লীগ সকল ওয়ার্ডের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ সকলকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে কমপক্ষে ৩ জন প্রার্থীদের নাম পাঠাবে। এ ক্ষেত্রে কোন বিদ্রোহী প্রার্থীর নাম পাঠিয়ে থাকলে সেটা স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড সিদ্ধান্ত নিবে বিদ্রোহীদের কি করবে।
সান নিউজ/এএস/কেটি