নিজস্ব প্রতিনিধি, লালমনিরহাট : লালমনিরহাটের অনেক কৃষক শীতকালীন সবজি মুলা চাষ করেছেন। এখন মুলার কোনো ক্রেতা নেই বললেই চলে, যারা আসছেন প্রতি মণ ১০-১৫ টাকা বলছেন। ফলে মুলাই এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে জেলার অনেক কৃষকের। আলু রোপণের স্বার্থে তারা এখন পাইকারদের নামমাত্র মূল্যে মুলা দিয়ে দিচ্ছেন।
লালমনিরহাট জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, পাঁচ উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৭ হাজার ৮১৩ হেক্টর জমিতে আলুসহ বিভিন্ন সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সুনির্দিষ্টভাবে কতটুকু জমিতে মুলা চাষ হয়েছে তা জানা না গেলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি জমিতে মুলা চাষ হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
চাষিরা বলছেন, আগাম মুলা নষ্ট হয়েছে বৃষ্টি-বন্যাতে। দ্বিতীয় দফায় ফলন ভালো হলেও দাম নেই। এক মণ মুলা বেচে ১০০ গ্রাম চালও কেনা যাচ্ছে না।
আদিতমারী উপজেলার কৃষকরা জানান, প্রতি দোন জমির (২৭ শতক) মুলা বিক্রি করেও ১ হাজার টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। পরবর্তী ফসল আবাদের সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে। আলু ও ভুট্টা লাগানোর জন্য ব্যবসায়ীদের এখন তারা বিনামূল্যে মুলা দিচ্ছেন। তারা নিজ খরচে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন।
সীমান্তবর্তী দুরাকুটি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, চাষিরা ট্রাক্টর দিয়ে মুলা ক্ষেত নষ্ট করছেন। চাষিরা বলেন, এবার ১০ বিঘা জমিতে মুলা চাষ করেছি। প্রথমবার ৪৫ ও দ্বিতীয়বার ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। দাম না পাওয়ায় নিজেই মুলা নষ্ট করছি। ভুট্টা-আলু লাগালে হয়তো ক্ষতি কিছুটা পোষানো যাবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. শামীম আশরাফ বলেন, যেকোনো ফসল ফলানোর আগে চাহিদার বিষয় খেয়াল রাখা দরকার। এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগ থেকে বারবার বলার পরও কৃষকরা আমলে না নেওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।
সান নিউজ/কেটি