মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজার শহরের কাশিনাথ রোডে লন্ডন ফেরত এক নারীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পুরো জেলাশহর জুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। করোনা সন্দেহে এরইমধ্যে সিভিল সার্জন ও পুলিশ প্রশাসনের তরফে ওই নারীর বাসাসহ আশেপাশের পাঁচটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।
২৩ মার্চ রোববার দুপুরে ওই নারীর মৃত্যু হলে অবিশ্বাস্য দ্রুততায় তার দাফন সম্পন্ন হয়। এর ফলে জনমনে করোনার আতঙ্ক দেখা দেয়। দিনভর এ নিয়ে শহরময় আলোচনা গুজব-গুঞ্জনও ছড়ায়।
তবে ২৩ মার্চ সোমবার সিভিল সার্জন বলেন, আমরা স্বাস্থ্যবিভাগের পুরো টিম অনেক পর্যালোচনা করেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কোনও প্রমাণ পাইনি। তবে সতর্কতার অংশ হিসেবে ওই প্রবাসী নারীর বাসাসহ আশপাশের পাঁচটি বাসার মানুষকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
ওই নারীর বাড়ি সদর উপজেলার কনকপুর ইউনিয়নে। ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজাউর রহমান চৌধুরী বলেন, ওই নারী রবিবার ২২ মার্চ দুপুর আনুমানিক ১টার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। পরে মৌলভীবাজার-২৫০শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে সোমবার সদর উপজেলার গিয়াসনগর এলাকায় নিজের প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসার পাশের কবরস্থানে ওই নারীকে দাফন করা হয়।
এদিকে মারা যাওয়া নারী গত ১১ জানুয়ারি দেশে ফেরেন বলে জানান মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমদ।
এদিকে জেলায় সম্প্রতি প্রচুর প্রবাসী আসায় করোনা সংক্রমণের শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয়রা। তাদের দাবি প্রবাসীদের সঠিকভাবে মনিটরিং করলে ও তাদের হোম কোয়ারেন্টিন করা হলে সংক্রমণের হার কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
জেলার কুলাউড়া, বড়লেখা, জুড়ী, রাজনগর, মৌলভীবাজার সদর, কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ইতালি, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা ৪৮৬ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে সিভিল সার্জন অফিস।
মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সিনিয়র স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাসির জানান, হোম কোয়ারেন্টিনে যাদের রাখা হয়েছে তাদের সিংহভাগই বিদেশ ফেরত। এর মধ্যে কুলাউড়ায় ৭৬ জন, বড়লেখায় ৫৪ জন, কমলগঞ্জে ৯১ জন, সদরে ৪৫ জন, জুড়ীতে ৫৩ জন, রাজনগরে ৬১ জন এবং শ্রীঙ্গলে ১০৬ জন।
নাসির আরো জানান, তাদের শরীরে করোনা ভাইরাসের কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি। যেহেতু তারা করোনা আক্রান্ত দেশ থেকে এসেছেন তাই বাড়তি সর্তকতার জন্য তাদের নিজ বাসা-বাড়িতে ১৪ দিন সেলফ কোয়ারেন্টিনে মনিটরিংয়ে রাখা হয়েছে।
সান নিউজ/সালি