নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঘা (রাজশাহী) : ‘পরনের পায়জামার ওপর দিয়ে সিগারেটের জ্বলন্ত আগুন চেপে ধরে নির্যাতন করতো স্বামী জুয়েল। সেই আগুনে শরীর পুড়ে যায়।’
শুক্রবার(১৯ ডিসেম্বর) রাজশাহীর বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মহিলা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ সুবর্না এ কথা বলেন।
তিনি জানান, শুধু এবারই নয়, বিয়ের পর থেকে কারণে-অকারণে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় নির্যাতনের শিকার হয়ে সন্তানও নষ্ট হয়ে গেছে। গরীব পরিবারের মেয়ে তাই নির্যাতন সহ্য করে সংসার করেছি।
এ আগে বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার খাঁয়েরহাট গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত সুবর্না (২০) উপজেলার খাঁয়েরহাট গ্রামের নুরুল আমিনের মেয়ে।
জানা যায়, ২৫ বছর বয়সে চারটি বিয়ে করেন জুয়েল রানা। তার অত্যাচারে তিন স্ত্রী চলে গেছে। সর্বশেষ বছরখানেক আগে এক লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে বিয়ে করেন সুবর্নাকে। তবে সুবর্নাও রেহাই পায়নি তার নির্যাতন থেকে। স্বামীর নির্যাতন সিগারেটের ছ্যাঁকায় তার ডান পায়ের হাঁটুর নিচে ও উপরে জখম হয়।
খবর পেয়ে তার মা নাজমা বেগম ও ভাই দুলাল হোসেন রাত ৮টার দিকে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শিরিন আকতার জানান, ডান পায়ের হাঁটুর নিচে ও উপরের অংশে বেশ কয়েকটি ক্ষতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
আহত সুবর্নার মা নাজমা বেগম জানান, বিয়ের কয়েক মাস পর ধারে ৩০ হাজার টাকা নিয়েছিল জামাই জুয়েল। সেই টাকা চাওয়ার পর থেকেই মাঝে মধ্যে মেয়েকে নির্যাতন করে। জামাইয়ের সাংসারিক অবস্থা ভালো দেখে মেয়েকে বিয়ে দেয়া হয়। সে এতটা খারাপ হবে বুঝতে পারিনি।
এর আগে এসব কারণে থানায় জিডি করা হয়। এই নির্যাতনের কারণে অভিযোগ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জুয়েল রানা জানান, একাধিক বিয়ের কথা শিকার করলেও সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমাকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। বিয়ের পর থেকে সে আমার কথামতো চলাচল না করে নিজের ইচ্ছামতো চলতে চায়।
এ নিয়ে সংসারে বাকবিতণ্ডা হয়। তবে অশান্তির মূলে হচ্ছে সুবর্নার মা।
বাঘা থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম জানান, শুক্রবার সুবর্না বাদী হয়ে একটি অভিযোগ করেছেন।
সান নিউজ/কেটি