নিজস্ব প্রতিনিধি, ফরিদপুর : ফরিদপুর সদরপুর উপজেলার সাহেবের চরে বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে আতিক পাঠাগারের উদ্যোগে উপজেলার মেধাবী শিক্ষার্থী ও শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
আতিক পাঠাগার চত্বরে পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা আবদুস ছাত্তার খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব কাজী শাহজাহান।
ভাচুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি বলেন, গ্রাম-বাংলার তৃণমূলের শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠাগারটি অমূল্য সম্পদ। পাঠাগারে বসে ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকসহ সর্বস্তরের লোকজন তাদের প্রয়োজনীয় বই পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন। তিনি তার ছাত্রজীবনের প্রথম এই আতিক পাঠাগারের উন্নয়নের জন্য সাধ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করবেন এবং পাঠাগারটির সমৃদ্ধি কামনা করেন।
তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের উদেশ্যে আরও বলেন, আতিক পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা আবদুস ছাত্তার খান তার সরাসরি শিক্ষক। তিনি একজন আলোর ফেরীওয়ালা, জ্ঞানের ফেরীওয়ালা। তোমরা তার পাঠাগারে থাকা বই পড়ে জ্ঞান অর্জন করে মানুষের মাঝে তা’ ছড়িয়ে দাও। শুধুমাত্র ইন্টারনেট নিয়ে বসে থেকো না। মূল্যবান অনেক বই তার সংগ্রহে রয়েছে সেগুলো পড়ো।
আলোচনায় বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা বলেন, আমাদের মত অজপাড়া গায়ে এমন একটি পাঠাগার রয়েছে তা অনেক জেলাতেও নেই। কিন্তু আমরা এখানে বই পড়তে আসি না। আজ যদি এখানে কনসার্টের আয়োজন করা হতো তাহলে লোকের অভাব থাকতো না। কিন্তু লাইব্রেরীর উপর আলোচনা এবং মেধাবীদের সংবর্ধনার গুরুগম্ভীর আলোচনার অনুষ্ঠানের মানুষের আগ্রহ কম।
আতিক পাঠাগার স্থাপন করা হয়েছে এতে ছাত্তার স্যারের ব্যক্তিগত কোনো লাভ নেই, তিনি জ্ঞানী মানুষ, আজীবন শিক্ষার সঙ্গে থাকতে চান এবং জ্ঞান বিতরণ করতে চান। আজ এখানে ছাত্র-ছাত্রী যারা উপস্থিত হয়েছো তারা মননশীল।
আলোচনায় অংশ নেন ইয়াসিন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এএইচএম ইসহাক, ফরিদপুর জেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, বাবুরচর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠান প্রধান মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, সদরপুর পূর্বকান্দা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু বকর তালুকদার, বেগম কাজী জেবুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ গোলাম ফারুক, সদরপুর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম সিদ্দিকী প্রমুখ।
আতিক পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা ও অনুষ্ঠানের সভাপতি আবদুস ছাত্তার খান বলেন, গ্রামবাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মেধাবিকাশের পথ সুগম করার চেষ্টাতেই আমি এই পাঠাগারটি স্থাপন করেছি। সকলের উদ্দেশ্যে তিনি উদাত্ত আহ্বান জানান, ‘নিজে বই পড়ুন, অন্যকে পড়তে বলুন, আপনার সন্তানকে পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে সচেষ্ট হোন। পাঠাগারকে ভালোবাসুন, পাঠাগারে পড়তে আসুন।’
আলোচনা শেষে সদরপুরের বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৫৩জন মেধাবী শিক্ষার্থীর হাতে বই ও সনদ তুলে দেওয়া হয় এবং সদরপুর উপজেলার তিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশ্ব জাকের মঞ্জিল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, আমিরাবাদ ফজলুল হক পাইলট ইনস্টিটিউশন ও লোহারটেক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের হাতে সম্মাননা ক্রেষ্ট তুলে দেন অতিথিরা।
সান নিউজ/বিডি/এনকে