জাহেদ, চট্টগ্রাম : স্বাধীনতার ৪৯ বছর পার হলেও হতদরিদ্র মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা কামাল পাশা (৬৯) বছর বয়সেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পায়নি। জন্মসূত্রে তিনি ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও থানার নগরকান্দি এলাকার কান্দিপাড়ার গ্রামের সন্তান হলেও তিনি ছোটবেলায় চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলায় ৯নং মীরসরাই সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ তালবাড়িয়া তার পালক পিতা ছদিকের রহমানের কাছে বড় হন।
স্বাধীনতার সময় সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি। ৪৯ বছর পার হয়ে গেছে, তার সাথী সহযোদ্ধারা মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারিভাবে সম্মানি ভাতা পাচ্ছেন। ভাগ্যের কি পরিহাস স্ত্রী দুই ছেলে ১ মেয়ে সহ নাতি নাতনি নিয়ে খুব কষ্টে ভ্যান গাড়ি করে কাঁচা বাজার ফেরি করে যে অর্থ পান তা দিয়ে তিনবেলা তার ভাত জুটছে না।
প্রথমে মোস্তাফা কামাল পাশা ভারত থেকে ট্রেনিং করেন। ভারতীয় তালিকা মুক্তিযোদ্ধার মুক্তিবার্তা ও সনদপত্রটি নং ১৮৬৫০ গেজেট নং ৪৮৭২।
জানা যায় ১৯৭১ সালে ১নং সেক্টর কমান্ডার রফিকের অধীনে ফেনি, শুভপুর, কুমিল্লা, চৌদ্দগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে পাক হানাদার বাহিনীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন।
তিনি জানান ১৯৭১ সালের ভারতের উদ্দেশ্যে গমন করার পর ভারতের বেলিনিয়া বর্ডার ক্যাম্প, হলিক্যাম্প আসাম গোহাটি লোহার বন থেকে ট্রেনিং করার পর কোম্পানি মোহাম্মদ রফিক ও সহযোদ্ধাদের সাথে থেকে ভারত থেকে ট্রেনিং করে দেশে এসে যুদ্ধ করেন।
কিন্তু স্বাধীনতার ৪৯ বছর পার হয়ে গেছে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় তার নাম এখনও উঠেনি। মোস্তাফা কামাল পাশা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন বেশ কয়েকবার মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করার পরও তিনি মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হননি।
তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় তালিকায় আমার পালিত পিতার নাম চৌদিকা রহমান মীরসরাই উপজেলার তালবাড়িয়া ঠিকানা আসলেও আমি বিগত ৪৫ বছর আগে এখান থেকে আমার জন্মস্থান ময়মনসিংহ চলে যায়।
অন্যদিকে তার জাতীয় পরিচয় পত্রে রয়েছে আমার জন্মদাতা পিতার নাম মৃত নভে আলী দপ্তরী। এদিকে তার জাতীয় পরিচয় পত্রেও বয়সে রয়েছে ভূল। আর এই ভুলের মাশুলে মুক্তিযোদ্ধা হয়েও দেশ হানাদার থেকে মুক্ত হলেও তিনি মুক্তি পাচ্ছে না এ ভুলের কাছ থেকে। তার আকুল আকুতি স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে হলেও তিনি যেন মুক্তিপান এই যন্ত্রণা থেকে।
এই বিষয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কবির আহম্মেদ বলেন, মোস্তাফা কামাল পাশা একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। উনার বাড়ি অন্য জেলা হওয়ায় জাতীয় পরিচয় পত্রে ভুল হওয়ার কারণে তিনি মুক্তিযোদ্ধা তালিকা অন্তর্ভুক্ত হয়নি। তারপরও আমরা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ থেকে মোস্তাফা কামাল পাশাকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবো।
সান নিউজ/জেএম/এনকে