নিজস্ব প্রতিনিধি, জয়পুরহাট : আজ ১৪ ডিসেম্বর জয়পুরহাট হানাদার মুক্ত দিবস। এই দিনে সাবেক কমান্ডার প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার আছাদুজ্জামান বাঘা বাবলুর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা তৎকালীন ডাক বাংলো মাঠে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করে জয়পুরহাটকে শত্রু মুক্ত ঘোষণা করেন।
এ সময় জেলার বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে থাকা পাকসেনারা প্রাণ ভয়ে বগুড়া, নাটোর ও সিরাজগঞ্জের দিকে পালিয়ে যায়।
৭১ সালের ২৪ এপ্রিল পাকসেনারা গভীর রাতে বগুড়ার সান্তাহার থেকে ট্রেনযোগে এসে দখল করে নেয় তৎকালীন মহকুমা শহর জয়পুরহাটকে। ২৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয় হানাদার বাহিনীর অগ্নি সংযোগ, ধর্ষণ আর নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ। ২৬ এপ্রিল স্থানীয় রাজাকার, আলবদরদের সহায়তায় জয়পুরহাট সদরের কড়ই কাদিপুর গ্রামের ৩শ ৭১ জন হিন্দু সম্প্রদায়ের মৃৎশিল্পীকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করে গুলি করে হত্যা করে এবং বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। এছাড়া সদর উপজেলার পাগলা দেওয়ান গ্রামে ১৮ জুন জুম্মার নামাজ শেষে বিভিন্ন গ্রাম থেকে কয়েক’শ মানুষকে ধরে এনে জবাই করে হত্যা করে পুতে রাখে। আক্কেলপুরে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শহীদ খোকনসহ ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধাকে পাক সেনারা গুলি করে হত্যা করে।
পাকসেনাদের বর্বর নির্যাতন, খুন ও ধর্ষণের দুঃসহ স্মৃতি মনে করে আজো শিহরে ওঠে জয়পুরহাটবাসী।
হত্যাযজ্ঞের নির্মম সাক্ষী বধ্যভূমিগুলো ও স্মৃতি হাতড়িয়ে নীরবে নিভৃতে কাঁদে।
সোমবার দিবসটি উপলক্ষে জয়পুরহাটে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। সকাল ৮টায় জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে পাগলা দেওয়ান বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, জেলা পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন।
পরে স্মৃতিস্তম্ভের পদদেশে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- জেলা প্রশাসক শরীফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাজ্জাদ হোসেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আরিফুর রহমান রকেট, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম সোলায়মান আলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন চন্দ্র রায় ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আমজাদ হোসেনসহ স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবর্গ।
সান নিউজ/কেটি