নিজস্ব প্রতিনিধি, রাজশাহী : রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলার ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন দিলীপ খালকো। ভুক্তভোগীর সঙ্গে বিয়ে করার শর্তে তাকে জামিন দেয়া হবে বলে জানান আদালত।
দুই পরিবারের সম্মতিতে গত সোমবার নয় বছরের ছেলের উপস্থিতিতে কারা ফটকে ভুক্তভোগীর সঙ্গে বিয়ে করেন তিনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) তাকে এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। তবে আসামি কারাগার থেকে বের হয়ে জামিনের অপব্যবহার করলে তার জামিন বাতিল হয়ে যাবে বলেও আদেশে বলেছেন আদালত।
এর আগে গত ২২ অক্টোবর কারাবন্দী আসামি ও ভিকটিমের মধ্যে কারা ফটকে বিয়ের আয়োজন করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। রাজশাহী কারাগারের তত্ত্বাবধায়কের প্রতি এ নির্দেশ দেয়া হয়।
বিয়ের পর সে বিষয়ে ৩০ দিনের মধ্যে লিখিতভাবে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। আদালতের আদেশ মোতাবেক বিয়ের বিষয়টি অবহিত করে জামিন আবেদন করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় শুনানির পর আদালত দিলীপ খালকোকে এক বছরের জামিন দিলেন। আদালতে আজ ভুক্তভোগীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহেদ চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
মামলার বিবরণে জানা যায়, রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলার সিতানাথ খালকোর ছেলে দিলীপ খালকোর সঙ্গে তার খালাতো বোনের (ভুক্তভোগী) মধ্যে ভালবাসার সম্পর্ক ছিল। এরই সূত্র ধরে ভিকটিমকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার সঙ্গে ২০১১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি দৈহিক মেলামেশা করেন দিলীপ খালকো। এতে ভুক্তভোগী গর্ভবতী হয়ে পড়ে। তারপর দিলীপ আর বিয়ে করতে রাজি হয়নি। পরবর্তীতে একই সালের ২৫ অক্টোবর গোদাগাড়ি থানায় দিলীপের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়। এ মামলায় আসামির ২০১২ সালের ১২ জুন এক রায়ে দিলীপকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। একইসঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করেন আদালত।
২০১২ সালের রায়ের পর থেকে দিলীপ কারাবন্দী। এ অবস্থায় দিলীপ হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন। এ আবেদনের ওপর শুনানিকালে তার আইনজীবী জানান, ভুক্তভোগী এখানে আছে। তারা বিয়ে করতে সম্মত। জামিন পেলে তাদের মধ্যে বিয়ে হবে। এ অবস্থায় আদালত কারা ফটকে বিয়ের আয়োজন করতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
সান নিউজ/কেটি