নিজস্ব প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে আদালতে হাজিরা দিতে আনা আসামি আদালত প্রাঙ্গণ থেকে পালিয়ে গেছেন। বুধবার (৯ ডিসম্বের) দুপুরে এই ঘটনা ঘটে।
পালিয়ে যাওয়া আসামির নাম ইকবাল হোসেন (৩৫)। তিনি দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের উস্তেংগের গ্রামের রমজান আলীর ছেলে। এ ঘটনায় আসামির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৫ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
একই সঙ্গে কীভাবে আসামি ইকবাল হোসেন পালিয়েছে এবং এ ঘটনায় কার অবহেলা ছিল তার খুঁজে বের করতে বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বুধবার সকালে সুনামগঞ্জ শহরতলির হালুয়ারগাঁওয়ের জেলা কারাগার থেকে দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের কিরনপাড়া গ্রামের মনোয়ারা বেগমকে হত্যা মামলার আসামি তার স্বামী ইকবাল হোসেনকে আদালতে হাজির করার জন্য নিয়ে আসে কোর্ট পুলিশ। পরে দুপুরে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে সকলের অলক্ষ্যে পালিয়ে যান ইকবাল হোসেন। বুধবার সন্ধ্যার পর অন্য আসামিদের ফিরিয়ে দেয়া হলেও ইকবাল হোসেনকে ফেরত দেয়া হয়নি। বিষয়টি পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসককে জানান জেলা কারা সুপার।
সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারের সুপার নুরশেদ আহমেদ ভুইয়া বলেন, ‘ইকবাল হোসেনকে পুলিশ বুধবার সকালে কারাগার থেকে আদালতে নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু রাত ১১টা পর্যন্ত তাকে কারাগারে ফেরত দেয়া হয়নি। কারাগার থেকে আদালতে জানতে চাইলে সেখান থেকে বলা হয়েছে আসামি পালিয়েছেন।’
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের কিরনপাড়া গ্রামের মনা মিয়ার মেয়ে মনোয়ারা বেগমকে বিয়ে করেন ইকবাল হোসেন। বিয়ের চার বছর পর ২০১৭ সালের জুন মাসে ইকবাল হোসেন তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম খুন করে লাশ জঙ্গলে লুকিয়ে রাখেন। মনোয়ারা বেগমের লাশ পচে দুর্গন্ধ বের হলে গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ২০১৭ সালের ১৩ জুন মনোয়ারা বেগমের মা আমিনা বেগম বাদী হয়ে ইকবাল হোসেনকে আসামি করে দোয়ারাবাজার থানায় মামলা দায়ের করে। মামলাটি এখনো বিচারাধীন আছে।
নিহত মনোয়ারা বেগমের মা আমিনা বেগম জানান, মনোয়ারার চার বছরের শাওন মিয়া নামের এক ছেলে রয়েছে। নাতিকে তিনি নিজেই দেখাশুনা করছেন। মনোয়ারার খুনি ইকবাল হোসেন আদালত প্রাঙ্গণ থেকে পালিয়ে যাওয়ার খবরে তিনি আতঙ্কে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেছেন, ‘পালিয়ে যাওয়া হত্যা মামলার আসামি ইকবাল হোসেনকে গ্রেফতার করার জন্য কাজ করছে পুলিশ।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, ‘পুলিশ সুপার ও জেল সুপার জানিয়েছেন আদালতে হাজিরা দেওয়ার সময় আসামি পালিয়ে গেছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।’
সান নিউজ/কেটি