নিজস্ব প্রতিনিধি, কুমিল্লা : সকল সন্তানদের সমানভাবে পৈতৃক সম্পত্তি বণ্টন করে না দেয়ায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে এক বৃদ্ধের লাশ দুইদিন ধরে দাফন না করে ঘরের মধ্যে ফেলে রেখেছে তার সন্তানেরা। এমনকি অন্যেদেরকেও লাশ দাফন করতে বাধা দিয়েছেন তার সন্তানরা।
বিবাদমান বিষয়টি নিয়ে দুইদিন পর্যন্ত কোনও সমাধান না হওয়ায় নিহত নুরুল হক ভূঁইয়ার নিথর দেহ পড়ে আছে কবরুয়া গ্রামের নিজ ঘরে। এলাকাবাসির মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে সমস্যা নিরসনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (০৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত লাশ দাফন করা সম্ভব হয়নি। এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, নুরুল হক ভূঁইয়া গত সোমবার ৭ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। পরে লাশ বাড়িতে নিয়ে গেলে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে জড়িয়ে পরে নিহতের দুই স্ত্রীর সন্তানরা। সম্পত্তি নিয়ে পূর্ব বিরোধের সমাধান না করে বাবার লাশ দাফন করতে দেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন তারা।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নুরুল হক ভূঁইয়ার প্রথম স্ত্রী আয়েশা আক্তারের পক্ষের রয়েছে ৬ মেয়ে। চট্টগ্রাম স্টিল মিলে চাকরির সুবাধে সুরমা আক্তার নামে সন্দ্বীপের আরেক নারীকে বিয়ে করেন। সেই সংসারে নুরুল হকের ২ ছেলে ও ২ মেয়ে। তিনি নতুন বাড়ি করে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গেই বসবাস করতেন। তাই সেই সংসারের সন্তানরা আগেই ১৪০ শতক জমি তাদের নামে লিখে নেন।
এ বিষয়ে শুরু হয় নতুন বিরোধ। পরে নুরুল হকের প্রথম স্ত্রী বাদী হয়ে সম্পত্তির ন্যায্য হিস্যা দাবি করে চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেন। সমস্যা সমাধান না করেই নুরুল হক ভূঁইয়া সোমবার সকালে মৃত্যুবরণ করলে বাবার সম্পত্তির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে লাশ দাফনে বাধা দেন প্রথম স্ত্রীর ৬ সন্তান।
এ সময় প্রবাস থেকে বৃদ্ধের ছেলে নুরুল আফছার মোবাইলে গ্রামবাসীকে বলেন, ‘বাবার লাশ দাফনের দরকার নেই। আমরা কাউকে এক কড়া সম্পত্তিও দেব না।’স্থানীয় ইউপি সদস্য পেয়ার আহমেদ বলেন, ‘নিহত নুরুল হক ভূঁইয়ার ২ পরিবারের শান্তির জন্য এবং তার লাশ দাফনের ব্যবস্থায় গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
ঘটনাস্থলে থাকা চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই কামাল হোসেন বলেন, ‘দুই পরিবার ও এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে আলোচনা চালিযে যাচ্ছি আশাকরি খুব তাড়াতাড়ি সমস্যার সমাধান করা যাবে।’
সান নিউজ/এসএ