নিজস্ব প্রতিনিধি, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) : ফরিদপুরের বোয়ালমারী পৌরসভার নির্বাচনে পৌর আওয়ামী লীগের মতামতকে উপেক্ষা করে উপজেলা আওয়ামী লীগের পছন্দের প্রার্থীদের নাম জেলা কমিটির মাধ্যমে কেন্দ্রে প্রেরণ নিয়ে তৃণমূলে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে সোমবার (৭ ডিসেম্বর) আপন দুই ভাই ও এক অখ্যাত, অপরিচিত ছায়া প্রার্থীর নাম প্রেরণের গুঞ্জন এলাকায় চাউর হলে চাপা ক্ষোভ প্রকাশ করে আ’লীগের পরীক্ষিত নেতাকর্মীরা।
প্রথম শ্রেণির এ পৌরসভায় আগামী ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফার পৌর নির্বাচনে আ’লীগ থেকে মেয়র পদে ৮ জন দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। এরমধ্যে ইতোপূর্বে দলের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে যারা নৌকা প্রতীকের বিপরীতে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছে তাদের বাদ দিয়ে তিন জন মনোনয়ন প্রত্যাশীর নাম কেন্দ্রে পাঠানোর প্রস্তাব করেন পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল আলীম মোল্যা।
বোয়ালমারী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মতামত উপেক্ষা করে উপজেলা আওয়ামী লীগ রোববার তিনজন মনোনয়ন প্রত্যাশীর নাম চূড়ান্ত করে জেলার মাধ্যমে কেন্দ্রে পাঠিয়েছে। এর মধ্যে মোজাফফর হোসেন বাবলু মিয়া গত পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে অবজ্ঞা করে তার নামও জেলার মাধ্যমে কেন্দ্রে প্রেরণ করা হয়েছে। তাই তাকে নিয়ে বোয়ালমারীতে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা।
বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে এবার দলীয় মনোনয়ন না দেয়ার সিদ্ধান্ত থাকলেও জেলায় পাঠানো তিন জনের সংক্ষিপ্ত নামের তালিকায় তার নাম থাকায় অনেক নেতাকর্মীই বিস্মিত। জেলায় পাঠানো তালিকার অপর দুই জন হলেন বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান মেয়র মো. মোজাফফর হোসেন বাবলু’র ছোট ভাই মো. হাসানুজ্জামান মিয়া মুকুল এবং ড্যামি প্রার্থী হিসেবে পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ সাহাবুদ্দিন আহমেদ সাফু।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এম মোশাররফ হোসেন এবং আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী মো. মোজাফফর হোসেন বাবলু ও মো. হাসানুজ্জামান মিয়া মুকুল আপন তিন ভাই। পৌর নির্বাচনে বার বার একই পরিবারের মধ্যে মনোনয়ন দেয়ার বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
কেন্দ্রে মেয়র প্রার্থীদের নামের তালিকা পাঠানোর বিষয়ে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল আলীম মোল্যা বলেন, শনিবার রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এম এম মোশাররফ হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মীরদাহ পিকুল ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান খসরুসহ চেয়ারম্যানের সরকারি বাসভবনে আমরা চারজনে বৈঠকে বসি। সেখানে আমি গত নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী বাবলু মিয়ার নাম বাদ দিয়ে তালিকা প্রস্তুত করার প্রস্তাব করি। কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যান আমার সঙ্গে একমত না হয়ে নির্বাচনী মাঠে থাকা যোগ্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বাদ দিয়ে তাদের ইচ্ছামত তালিকা প্রস্তুত করায় আমি কাগজে সই করে বৈঠক ছেড়ে চলে আসি।
পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান খসরু তালিকা প্রস্তুত প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের কোন দাম নাই। তালিকা মুশা মিয়া প্রস্তুত করবেন। তিনি (মুশা মিয়া) বলেছেন, আপনারা কাগজে সই করে দিয়ে যান, যেটা ভাল বুঝি করব।
ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. সুবল চন্দ্র সাহা বলেন, বোয়ালমারীতে মেয়র প্রার্থীর তালিকা প্রস্তুত নিয়ে আমাদের কাছে নানাবিধ অভিযোগ আছে। আমরা সেগুলো যাচাই বাছাই করে কেন্দ্রে পাঠাবো।
সান নিউজ/কেএ/এনকে/এস