নিজস্ব প্রতিনিধি, মুন্সীগঞ্জ : করলা (করল্লা, উচ্ছা, উচ্ছে) এক প্রকার ফল জাতীয় সবজি। বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় করলার উৎপাদনে বেশ লাভবান মুন্সীগঞ্জের কৃষকরা।
কৃষকরা জানান, এবছর করলা উৎপাদনে বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। আর এক বিঘায় উৎপাদিত করলা পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ হাজার টাকা দামে। অর্থাৎ করলা বিক্রি করে বিঘা প্রতি কৃষকরা ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা লাভ পাচ্ছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৬টি উপজেলায় প্রায় ২৫ হেক্টর জমিতে এবছর করলার আবাদ করেছেন কৃষকরা। নানা জাতের মধ্যে বুলবুলি, বুলবুলি প্লাস, কসমস, রেসার, রাইডার বিভিন্ন প্রজাতির করলা থাকলেও সবচাইতে ভালো জাত ‘টিয়া’র উৎপাদন হচ্ছে মুন্সীগঞ্জে।
মুন্সীগঞ্জের মোল্লাচর, যোগনীঘাট, রামপাল ইউনিয়নের বজ্রযোগিনী এলাকায় সরজমিনে দেখা যায়, উঁচু জমিতে চাষ করা হয়েছে করলা। কৃষকরা জানান, জমি থেকে বর্তমানে পাইকারি ৫০-৫৫ টাকা দামে ও খুচরা বাজারে ৬০ থেকে ৭০ টাকা দামে করলা বিক্রি হচ্ছে। মুন্সীগঞ্জে উৎপাদিত এই করলা জেলার প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি রাজধানীর যাত্রাবাড়ি ও কারওয়ান বাজারে বিক্রির জন্য পাইকাররা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
কৃষক মহিউদ্দিন ফকির বলেন, ‘গত ৪০ বছর ধরে উচ্ছের (করলা) আবাদ করে আসছি। অন্য সবজির চাইতে উচ্ছে চাষে বেশি লাভ। এবছর ১০ কানি জমিতে চাষ করেছি। উৎপাদন মৌসুমে প্রতি সপ্তাহে জমি থেকে সবজি তোলা সম্ভব।’ বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে বিঘা প্রতি ২০-২৫ মণ করলা উত্তোলন করা যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
কৃষক আবদুর লোকমান বেপারী জানান, প্রতি সপ্তাহে জমি থেকে উত্তোলন করে রাস্তার পাশে চাঙারি দিয়ে করলা সাজিয়ে রাখা হয়। রাত ৮টায় পাইকাররা এসে ট্রাকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী-কারওয়ান বাজারে সেসব নিয়ে যায়। স্থানীয় বাজারেও করলা বিক্রি করা হয়।
মুন্সীগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. শাহ আলম জানান, মুন্সীগঞ্জ জেলার উঁচু এলাকায় করলার চাষ ও ফলন ভালো হয়। এসব সবজির আকার ও রঙ খুব সুন্দর। তাই সুযোগ অনুযায়ী কৃষকদের করলা চাষের পরামর্শ দেওয়া হয়। কৃষকরা ভালো উৎপাদনে অর্থ উপার্জন করছেন এটি সুখবর। উৎপাদন বেশি হলে কৃষকরা চাষাবাদে আরও বেশি উদ্ধুদ্ধ হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘করলা একপ্রকার ফল জাতীয় সবজি। এলার্জি প্রতিরোধেও এর রস দারুণ উপকারি। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও এটি ভালো।’ প্রতিদিন নিয়মিত করলার রস খেলে রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব বলেও জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।
সান নিউজ/এসএম