নিজস্ব প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা : ধর্মীয় পরিচয় গোপন করে মুসলিম যুবতীকে ভূয়া বিয়ের ৪ বছর পর অস্বীকারকারী প্রতারক শিমুলের শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন সাতক্ষীরা শহরের মধ্যকাটিয়া গ্রামের মৃত ইউসুফ খানের কন্যা নাজনীন আক্তার পিয়া।
লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, আমি ভালোবাসার আশ্বাসে প্রতারিত হওয়া এক অসহায় নারী। বিগত ২০১৬ সালের দিকে যশোর জেলার বাঘারপাড়া উপজেলার নলডাঙ্গা গ্রামের পরিতোষ বিশ্বাসের পুত্র শিমুল বিশ্বাস সাতক্ষীরায় আরএফএল কোম্পানিতে চাকুরিত করত। সে সময় তার সাথে পরিচয় হয় আমার। শিমুল নিজেকে মুসলিম পরিবারের পরিচয় দিলে তার সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। সে সময় তার মিষ্টি কথার জালে ফেঁসে গিয়ে নিজের স্বজনদের চেয়েও বেশি ভালোবেসেছিলাম। যে কারণে বিয়ের আশ্বাস পেয়ে সকলকে ফেলে তার কাছে গিয়েছিলাম। সে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে মিথ্যা বিবাহ করে এবং আমরা সংসার করতে থাকি।
পিয়া বলেন, বিয়ের কিছুদিন পর আমি জানতে পারি শিমুল আসলে হিন্দু। হিন্দু যুবকের সাথে চলে যাওয়ায় আমার পরিবার মেনে নিতে রাজি না হওয়ায় এবং সে সময় ফিরে আসার সুযোগ না থাকায় আমি তার সাথেই সংসার করতে থাকি। দাম্পত্য জীবনে আমার গর্ভে দুইবার সন্তান আসলেও কৌশলে তা নষ্ট করে দেয়। ইতোমধ্যে বদলীয় হয়ে গোপনে চট্টগ্রামে চলে যায়। চট্টগ্রামের বাসায় থাকা অবস্থায় তুচ্ছ ঘটনায় শিমুল আমাকে প্রায় মারপিট এবং কুপিয়ে হত্যার চেস্টাও করে। ভয়ে সেখান থেকে আমি সাতক্ষীরায় চলে এসে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি। ডায়েরির বিষয়টি অবগত হয়ে শিমুল আমাকে ডায়েরি তুলে নিতে বলে। পরে শিমুল যশোরের বাঘারপাড়া থানায় উল্টো আমার বিরুদ্ধে একটি জিডি করে।
পিয়া আরও বলেন, পরবর্তীতে মোবাইলে শিমুল আমার সাথে সুন্দর ব্যবহার করতে থাকে এক পর্যায়ে আমার সাথে পুনরায় সংসার করবে মর্মে বাঘারপাড়া থানায় যেতে বলে। আমি সরল বিশ্বাসে সেখানে গেলে কৌশলে শিমুল কতিপয় লোকদের সহযোগিতায় একটি সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। শিমুলের ভগ্নিপতি অসীম শিকদার মোবাইলে আমাকে বলে, আপনাকে কোনভাবেই আমরা মেনে নেবো না। আপনি আত্মহত্যা করবেন? করেন, আমার শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে আত্মহত্যা করেন।
এদিকে ওই প্রতারক শিমুলের সাথে আমার জীবনের ৪টি বছর কেটে গেছে। এখন জানতে পারছি ওই বিবাহও ছিলো ভুয়া এবং সাজানো। একদিকে আমার পরিবারও বাড়িতে থাকতে দিতে রাজি হচ্ছে না। অন্যদিকে স্বামী হিসেবে বিশ্বাস করে যার হাতে জীবনের সব কিছুই শপে দিয়েছিলাম, হিন্দু জানার পরও ভালোবেসে তার হাত ধরেই ছিলাম। সেও আজ তাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু তার স্বজনদের দিয়েও দেয়া হচ্ছে নানা হুমকি। আমি এখন কোথায় যাব? আত্মহত্যাই মনে হচ্ছে আমার একমাত্র রাস্তা- বলেন নাজনীন আক্তার পিয়া।
তিনি যাতে স্বামীর ঘরে পরিপূর্ণ মর্যাদায় ফিরে যেতে পারেরন তার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মহোদয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সান নিউজ/এমআই/এস