নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর : ৮৫ বছরের বৃদ্ধ দাদার ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে লম্পট নাতির কু-কর্মের দায়। নাতির ধর্ষণে শিশু অন্তঃসত্ত্বা ও গর্ভপাত ঘটানোর ফল ভোগ করছেন ওই বৃদ্ধ। স্থানীয় মাতবররা সাত সন্তানের জনক ৮৫ বছরের ওই বৃদ্ধের সঙ্গে ১১ বছরের শিশুর বিয়ে দিয়েছেন।
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল আমখাওয়া ইউনিয়নের বয়ড়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, স্থানীয় মহিলা মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীর (১১) সঙ্গে সুরমান আলীর ছেলে শাহিনের (১৮) শারীরিক সম্পর্ক হয়। এতে ওই শিক্ষার্থী অন্তঃসত্ত্বা হয়। ১০-১২ দিন আগে কবিরাজি চিকিৎসায় গর্ভপাত ঘটানো হয়। বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় চলতি সপ্তাহে এ নিয়ে ইউপি সদস্য ও স্থানীয় মাতবররা এ বিষয়ে সালিশ বৈঠক করেন। সালিশে নাতির কুকর্মের দায় চাপিয়ে দেয়া হয় ৮৫ বছরের বৃদ্ধ দাদার ওপর। শেষে বৃদ্ধের সঙ্গেই ওই শিশুছাত্রীর বিয়ে দেয়া হয়।
বৃদ্ধ দাদা মহির উদ্দিনের সঙ্গে সরেজমিনে কথা বলতে গিয়ে দেখা যায়, তিনি ঠিকমতো কথাই বলতে পারেন না, চোখেও ঝাপসা দেখেন। তিনি সাত সন্তানের পিতা। দুই স্ত্রী মারা গেছেন। তৃতীয় বিয়েটি করেছেন ২৭ বছর আগে। বৃদ্ধকে জিজ্ঞাসা করা হয় চতুর্থ বিয়ে কী কারণে করলেন?
বৃদ্ধ বলেন, আমার একটা দোষ বর্তাইয়া বিয়া করাইছে গফুর মাস্টার, কদ্দুছ মাস্টার, নাদু মেম্বারসহ কয়েকজন। আসলে আমি নির্দোষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার মাদ্রাসাশিক্ষক বলেন, ছেলের ঘরের নাতি দোষ করেছে, এর দায়ভার জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা ওই বৃদ্ধের ওপর চাপিয়ে শিশুটিকে বিয়ে দেয়া হয়।
চর আমখাওয়া ইউনিয়নের সদস্য জয়নাল আবেদীন নাদু বলেন, মুরব্বিদের নিয়ে সালিশ করা হয়। সালিশে অনৈতিক কাজ করায় বৃদ্ধকে ১০ দোররা এবং শাহিনকে ১০টি দোররা মেরে শরীয়ত মতে বিয়ে হয়। তবে তার ছেলে ঘরের নাতি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। এ ঘটনার জন্য বৃদ্ধই দায়ী।
চর আমখাওয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান আকন্দ জানান, এটা আশ্চর্য ও ন্যক্কারজনক ঘটনা। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমএম মইনুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের ঘটনা আমার জানা নেই। লিখিত কোনো অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সান নিউজ/বিএস