নিজস্ব প্রতিনিধি, রাঙ্গামাটি : মধ্যরাতে গুলির শব্দে কেঁপে উঠেছে আয়তনে দেশের সবচেয়ে বড় উপজেলা বাঘাইছড়ি। শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) রাত আনুমানিক এগারোটা থেকে বারোটা পর্যন্ত উপজেলার তালুকদার পাড়া ও বাবুপাড়া এলাকায় প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়।
বাঘাইছড়ি থানা পুলিশও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। তবে কাদের মধ্যে, কী কারণে এই বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে, সেই সম্পর্কে তাৎক্ষণিক কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ।
বাঘাইছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আশরাফউদ্দিন জানান, রাতে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে আমরাও প্রচণ্ড গুলির শব্দ শুনতে পেয়েছি। কিন্তু এত রাতে সেখানে যাওয়া সম্ভব নয়। কোনো হতাহতের খবরও আমাদের কাছে আসেনি। সকাল হলে জানা যাবে সেখানে কী হয়েছে।
একটি আঞ্চলিক দলের সঙ্গে যুক্ত দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, রাতে বাবুপাড়া ও তালুকদার পাড়ার মধ্যবর্তী স্থানে সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (এমএনলারমা) ঘাঁটিতে হামলা চালাতে আসে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতির একদল সশস্ত্র ক্যাডার। এই সময় আগাম খবর প্রতিরোধ গড়ে তোলে সংস্কারপন্থীরা। তখন দুই পক্ষের মধ্যে প্রচণ্ড গোলাগুলি হয়। তবে এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়েছে কি-না নিশ্চিত করতে পারেনি সূত্রটি।
এই ব্যাপারে যোগাযোগ করেও আঞ্চলিক দলগুলোর কোনো দায়িত্বশীল মুখপাত্রের বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
বাঘাইছড়ির স্থানীয় সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন জানান, আমরা প্রায় ঘণ্টাব্যাপী দুই পক্ষের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধের তথ্য জেনেছি। গুলির প্রচণ্ড শব্দে উপজেলাজুড়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। কোনো পক্ষই এ পর্যন্ত আহত বা নিহত হওয়ার কোনো তথ্য জানায়নি বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, আয়তনে দেশের সবচেয়ে বড় এই উপজেলায় পাহাড়ের বিবাদমান চারটি আঞ্চলিক দলের সবগুলোরই উপস্থিতি আছে। ফলে প্রায়ই এখানে সশস্ত্র সংঘাতের ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এই উপজেলায় নির্বাচনী দায়িত্ব পালন শেষে ফেরার সময় সরকারি গাড়ি বহরে সশস্ত্র হামলায় আটজন সরকারি কর্মচারী মারা যান।
বর্তমানে এই উপজেলায় চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (এমএনলারমা) কেন্দ্রীয় নেতা সুদর্শন চাকমা। এর আগের চেয়ারম্যান ছিলেন সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির বড় ঋষি চাকমা।
সান নিউজ/এসএম