নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের বিভিন্ন জেলা শহর থেকে রাজধানীতে গণপরিবহণ প্রবেশের ক্ষেত্রে থাকবে নিষেধাজ্ঞা। রাজধানীর আশপাশে গড়ে তোলা হবে ১০টি টার্মিনাল। ২৯১ রুটের পরিবর্তে ৪২টি রুটে ২২টি কোম্পানির মাধ্যমে চলবে গণপরিবহন। নগরীতে চলাচলরত আড়াই হাজার কোম্পানির প্রায় ৩০ হাজার পরিবহনের পরিবর্তে ৯ হাজার ২৭টি গণপরিবহন পরিচালনার প্রস্তাব করা হয়েছে।
রাজধানী ঢাকার গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে পুরো পরিবহণ ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হচ্ছে। এ লক্ষ্যে গঠিত বাসরুট রেশনালাইজেশন কমিটি প্রায় দুবছর ধরে কাজ করছে। সম্প্রতি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কমিটির কাছে সমীক্ষা রিপোর্ট পেশ করেছে। এতে বলা হয় বাসভাড়া নৈরাজ্য ঠেকাতে গণপরিবহনে স্মার্টকার্ডের মাধ্যমে ভাড়া পরিশোধের নিয়ম চালু করতে হবে।
২০১৭ সালের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে নগরীতে নিবন্ধিত বাসের সংখ্যা ৩০ হাজার ২৭৪টি। গত তিন বছরে আরও কিছু বাস রাজধানীতে যাত্রীসেবায় যুক্ত হয়েছে। এ অবস্থায় বিদ্যমান বাসগুলোর মূল্যায়নের মাধ্যমে কোম্পানির মালিকানার ভাগ নির্ধারণ করা হবে। এসব বাস ও মিনিবাস বিলুপ্ত করা হলে সেগুলোর জন্য সরকার ক্ষতিপূরণ দেবে। নতুন বাস সংগ্রহের জন্য ৪-৫ শতাংশ সুদে ঋণ দেওয়ারও সুপারিশ করা হয়।
পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সুপারিশ অনুযায়ী অতিরিক্ত ভাড়া বিড়ম্বনা ঠেকাতে স্মার্টকার্ডের মাধ্যমে বাসগুলোয় টিকিটিং সিস্টেম করা হবে। পাশাপাশি ভাড়া নীতিও প্রণয়ন করা হবে। এতে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভাড়া আদায়ের সিস্টেম থাকবে না। ফলে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বা যাত্রীদের সঙ্গে হেলপারদের বাগবিতণ্ডা হবে না।
বর্তমানে দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় মাত্র তিনটি বাস টার্মিনাল রয়েছে। এগুলো হচ্ছে মহাখালী, সায়েদাবাদ ও গাবতলী। এর মধ্যে ৯ একর আয়তনের মহাখালী বাস টার্মিনালে ৫০০টি বাসের ধারণ ক্ষমতা থাকলেও তাতে প্রতিদিন ২ হাজার ৭৪৪টি বাস প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। ১৩ একর আয়তনের সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে ৩০০টি বাসের ধারণক্ষমতা থাকলেও তাতে ৪ হাজার ২০৯টি বাস প্রবেশের অনুমতি রয়েছে।
প্রস্তাবনায় বলা হয়, বর্তমানে প্রায় আড়াই হাজার কোম্পানির পরিবর্তে মাত্র ২২টি কোম্পানির মাধ্যমে ৯ হাজার ২৭টি বাস পরিচালিত হবে। এর মধ্যে ৬ হাজার ৪৫৭টি বাস ও ২ হাজার ২৭০টি মিনি বাস থাকবে। তার মধ্যে ৩ হাজার ৭৬১টি সম্পূর্ণ নুতন বাস রাখা হবে। এসব কোম্পানিতে গণপরিবহন মালিকরা শেয়ারহোল্ডার হিসেবে থাকবেন।
সঠিকভাবে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতিটি কোম্পানিতে ৫০০টির কম গণপরিবহন রাখা হবে। এ কোম্পানিগুলোকে আইনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণের জন্য কর্তৃপক্ষ গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ের ভারসাম্য রক্ষা করা হবে। ৫ বছরের বেশি সময়ের বাস রাখা হবে না।
সান নিউজ/এসএ