নিজস্ব প্রতিনিধি, সিলেট : রায়হান আহমদ হত্যাকাণ্ডের একমাস পূর্তিতে সিলেট নগরীর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সামনে আলোক প্রজ্জ্বলন করেছে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ‘দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’। কর্মসূচি থেকে আবারও বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়েছেন তার ভাই তানভির ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।
বুধবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এই কর্মসূচি পালন করা হয়। ১১ অক্টোবর এই ফাঁড়িতেই নির্যাতনে নিহত হন নগরীর আখালিয়া এলাকার যুবক রায়হান আহমদ (৩৪)।
আলোক প্রজ্জ্বলনের আগে সংক্ষিপ্ত সভায় বক্তারা বলেন, ঠিক এক মাস আগে এই ফাঁড়িতে রায়হান আহমদকে ধরে এনে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে। এই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত বহিস্কৃত এসআই আকবর হোসেনকে গ্রেপ্তার করায় আমরা পুলিশকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তবে আটকের পর আকবরই জানিয়েছেন, তাকে ‘সিনিয়র অফিসাররা’ পালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। আমরা এই সিনিয়র অফিসারদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
তারা বলেন, সবার আগে রায়হানকে পালানোর পরামর্শ দেওয়া ‘সিনিয়র অফিসারদের’ খুঁজে বের করতে হবে। নেতৃবৃন্দ এই ‘সিনিয়র অফিসারদের’ অবিলম্বে চিহ্নিত করে রায়হান হত্যা মামলার আসামি করার দাবি জানান। তাদের গ্রেপ্তার করা না হলে রায়হান হত্যার সুষ্ঠ বিচার সম্ভব হবে না বলেও মন্তব্য করেন বক্তারা।
তারা বলেন, পুলিশ ফাঁড়িগুলোতে ধরে এনে নির্যাতন, চাঁদা আদায়, মানুষকে হয়রানির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। আজকের কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা পুলিশের এসব বেআঈনী কার্যক্রম বন্ধেরও দাবি জানাচ্ছি।
কর্মমূচিতে অংশ নিয়ে রায়হানের ছোটভাই রাব্বি আহমদ তানভির বলেন, আমার ভাইকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে আর কেউ যেনো এরকম বিনাবিচারে হত্যার শিকার না হয়। এজন্য এই হত্যাকান্ডের সাথে যারা জড়িত তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা প্রথম থেকে এই ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করে আসছি। কারণ পিবিআই পুলিশেরই একটি বাহিনী। তাদের দ্বারা পুলিশের অপরাধের সুষ্ঠ তদন্ত সম্ভব নয়।
রাব্বি বলেন, আকবরকে গ্রেপ্তার করা হলেও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও সিম এখনও উদ্ধার করা হয়নি। এগুলো উদ্ধার করা হলেই আকবর পালানোর আগে কাদের সাথে কথা বলেছিলেন, কাদের পরামর্শ নিয়েছেন, তাও বেরিয়ে আসবে। এজন্য আকবরের মোবাইল সিম দ্রুত উদ্ধারের দাবি জানাচ্ছি। সংক্ষিপ্ত আলোচনা পর্ব শেষে পুলিশ ফাঁড়ির দেয়ালে আলোক প্রজ্জ্বলন করা হয়।
ছোট ভাই রাব্বি আহমদ তানভীর ছাড়াও এই কর্মসূচিতে রায়হানের পরিবারের পক্ষে অংশ নেন তার খালা ফাহমিদা ইসলাম, খালাতো ভাই পাভেল আহমদ ও খালাতো বোন আমেনা বেগম।
আলোচনা পর্বে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ওয়ার্কাস পার্টির জেলা সভাপতি সিকন্দর আলী, আদিবাসী নেতা গৌরাঙ্গ পাত্র, প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মী অ্যাডভোকেট মহিতোষ দেব মলয়, সমাজকর্মী নিগাত সাদিয়া। আয়োজক সংগঠন দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’র পক্ষে বক্তব্য রাখেন সংগঠক আব্দুল করিম কীম, আশরাফুল কবির, দেবাশীষ দেবু, রাজীব রাসেল, দেবব্রত চৌধুরী লিটন, সত্যজিত চক্রবর্তী, মাহবুব রাসেল, নিরঞ্জন সরকার অপু, শামসুল আমিন, মেঘদাদ মেঘ প্রমুখ।
সান নিউজ/এক/এস