নিজস্ব প্রতিনিধি, সিলেট : সিলেটে রায়হান আহমদ হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত পুলিশের বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়া গ্রেফতারের খবরে উল্লাস করেছেন আন্দোলনকারীরা।
আকবরের যাতে সর্বোচ্চ শাস্তি হয় আন্দোলনকারীদের ভাবনার বিষয় এখন সেটাই। এসব বিষয় নিয়ে আজকালের মধ্যেই তারা বসে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোখলেছুর রহমান কামরান।
এর আগে রায়হানের মা সালমা বেগম ও স্ত্রী তান্নি তাদের প্রতিক্রিয়ায় সন্তোষ ও আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করে বলেন, তার ফাঁসি চাই। শুধু আকবর না, তাকে যে বা যারা যেভাবে সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় এনে দ্রুত বিচার করতে হবে। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত হোক এই তাদের প্রত্যাশা।
এদিকে রায়হান হত্যাকাণ্ডের পরপরই তার নিজের এলাকা সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আখালিয়া নেহারীপাড়া এলাকার জনগণসহ সিলেট মহানগরীর বিভিন্ন সংগঠন আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামেন। সংবাদ সম্মেলন, অবরোধ, মানববন্ধন, অনশনসহ প্রতিটি কর্মসূচিতে নামতে থাকে মানুষের ঢল।
সর্বশেষ এ ব্যাপারে তারা সোমবার রাজধানী ঢাকায় গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করে মামলাটির বিস্তারিত অবগত করেছেন। ঐ সময়ে খবর পেয়েছেন আকবর গ্রেফতারের। এতে তারা পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ উপস্থিত সবাই খুশি হন।
এর পরপরই সান নিউজের সাথে কথা বলেন আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান কামরান ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা রায়হানের চাচা ময়নুল ইসলাম কুদ্দুস। তারা বলেন সন্তোষ ও শুকরিয়া প্রকাশ করে গণমাধ্যমকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
কামরান আন্দোলন প্রসঙ্গে বলেন, আমরা দু'একদিনের মধ্যে বসে পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণ করবো। তার সর্বোচ্চ শাস্তি শুধু আমরা নয়, দেশের মানুষ চান। চান সিলেটবাসীও। সুতরাং আমাদের আত্মতৃপ্তির কোন সুযোগ নেই। মামলার কার্যক্রম যাতে স্বাভাবিক নিয়মে চলে, আইনী কার্যক্রম যাতে ব্যাহত না হয়, এ ব্যাপারে আমরা খুব সচেতন আছি এবং থাকবো।
ভাতিজা রায়হান হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে সুদুর যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরেছেন তার চাচা ময়নুল ইসলাম কুদ্দুস। তিনি গণমাধ্যম কর্মী, পুলিশসহ আকবর গ্রেপ্তারের সাথে জড়িত সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। এরপর বলেন, ১০ হাজার টাকার জন্য নির্যাতন করে আমার ভাতিজাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আকবরসহ জড়িত প্রত্যেকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
উল্লেখ্য, গত ১১ অক্টোবর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনের পর ওসমানী হাসপাতালে রায়হানের মৃত্যু হয়। দ্বিতীয় ময়না তদন্ত রিপোর্টেও পরিস্কার উল্লেখ করা হয় যে, ভারি বস্তুর আঘাতের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। তখন বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ছিলেন বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়া। ১৩ অক্টোবর থেকে তিনি লাপাত্তা ছিলেন। সোমবার সকালে তাকে কানাইঘাটের ডনা সীমান্ত এলাকা থেকে স্থানীয় রহিম আশুক ও তাদের অপর ৪ বন্ধু এবং ভারতের খাসিয়াদের সহযোগীতায় গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার তাকে আদালতে তোলে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন জানানোর কথা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই)।
সান নিউজ/এক/এনকে