নিজস্ব প্রতিনিধি, মাদারীপুর : পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ বিধৌত মাদারীপুর জেলা। প্রমত্তা পদ্মা আর আড়িয়াল খাঁর অববাহিকা জুড়ে কার্তিকের ভোরে দেখা যাচ্ছে ছোপ ছোপ কুয়াশার আস্তরণ।
গত কয়েকদিন আগে থেকেই হঠাৎ করে শীতের প্রভাব শুরু হয়েছে। ভোরে কুয়াশা আর বিকেলের হিমেল হাওয়া শরীরে কাঁপুনি ধরিয়ে দিচ্ছে। রাতে কাঁথার স্থান দখল করে নিয়েছে কম্বল বা লেপ। সকালে সোয়েটার বা গরম কাপড় পড়তে দেখা যাচ্ছে তরুণ-তরুণীদের। আর বিকেলে চাদর গায়ে জড়িয়ে গ্রাম্য বাজারের চায়ের দোকানে ধোঁয়া উঠা গরম কাপে উষ্ণতা ছড়াচ্ছে বয়স্করা।
মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) ভোরে জেলার আড়িয়াল খাঁ নদের তীরে গিয়ে দেখা গেছে, বিস্তির্ণ চর কুয়াশার চাদরে ঢাকা। কুয়াশা ভেদ করে জেগে উঠছে ভোরের সূর্য। শীতে উত্তাপের আশায় নদী তীরের বাসিন্দাদের বাইরে এসে রোদ পোহাতেও দেখা গেছে।
শীতের শুরুতে প্রকৃতির রূপের পরিবর্তন দেখতে চাইলে গ্রামীণ মেঠোপথ, নদীর চরাঞ্চল, ফসলের খেত, নদীর জলে ডিঙ্গি নৌকায় ভেসে বেড়ানোর মধ্য দিয়ে প্রকৃতির সৌন্দর্য অবলোকন করা সম্ভব। বাতাসে শিউলী ফুলের মনমাতানো গন্ধ, ছাতিম ফুলের মাদকতাময় ঘ্রাণ আর হাসনাহেনার সুবাস যে কারো মনকেই আন্দোলিত করবে।
চলতি বছর শীতের আগমন আকস্মিক হলেও প্রকৃতিতে অন্যরকম এক সতেজতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বয়স্করা বলছেন, অনেক অনেক বছর আগে শীতের শুরুতে যেরকম অনুভব হতো, এবছরের শীতকালের শুরুটা ওই রকমই মনে হচ্ছে। কেমন যেন জড়তাহীন শীতের আবহ।
স্থানীয়রা জানান, এবারের শীত হঠাৎ করেই শুরু হয়েছে। ভোরে বেশ কুয়াশাও পড়ছে আর রাতে লেপ-কম্বল গায়ে দিয়ে ঘুমাতে হয়।
এদিকে শীতের হঠাৎ আগমনিতে ব্যস্ততা বেড়ে গেছে লেপ-তোষকের দোকানে। নতুন লেপ তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে দোকানীরা। তবে গ্রামীণ বাজারের দোকানগুলোতে শীতের নতুন প্রসাধনী এখনো আসেনি বলে জানা গেছে। স্থানীয় ক্রেতারা জানান, নতুন উৎপাদিত ভ্যাসলিন, ক্রিম, পেট্রোলিয়াম জেলি, গ্লিসারিন, চ্যাপস্টিক এখন পর্যন্ত আসেনি দোকানগুলোতে। গত বছরেরগুলো বিক্রি করছে।
পদ্মাপাড়ের বাসিন্দারা জানান, বিকেল হলেই শীত পড়তে শুরু করে। নদী থেকে আসে শীতল বাতাস। ফলে রাতেও বেশ ঠাণ্ডাই পড়ে। আর ভোরে হালকা কুয়াশা। মাঝেমধ্যে কুয়াশা বেশ ঘন হয়েও পড়ে। পথঘাট শিশিরে ভিজে থাকে। সব মিলিয়ে এবার আগাম শীত পরেছে।
শীতের আগমনী বার্তায় প্রকৃতি সেজেছে নতুন সাজে। গাছে গাছে ফুটতে শুরু করেছে শীতকালীন ফুল। ঘাসের ডগায় জমে থাকছে শিশির কণা। মাঠে মাঠে নবান্নের ফসল তোলার অপেক্ষায় কৃষকেরা। যেন ফসল তোলা শেষেই শীতকে আমন্ত্রণ জানাবে পিঠা-পুলির উৎসবে!
সান নিউজ/এসএম