নিজস্ব প্রতিনিধি, ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহে কৃষকের টমেটোর চারা অজ্ঞাত রোগে মারা যাচ্ছে। সাবাড় হচ্ছে ক্ষেতের পর ক্ষেত। অনেকেই ঋণ নিয়ে সবজি চাষ করে এখন দিশেহারা। কোনো কোনো কৃষক ক্ষতি এড়াতে মরা ও পচন ধরা টমেটো গাছের চারা ফেলে দিয়ে পুনরায় ক্ষেতে মরিচ ও কপির চারা রোপণ করছেন।
ময়মনসিংহে কয়েকশ একর জমিতে টমেটো গাছে পচন ধরায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। এ বছর ময়মনসিংহে ১৮ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করে কৃষি বিভাগ। ইতিমধ্যে ৭ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ করা হয়েছে তথ্য রয়েছে তাদের কাছে।
সদর উপজেলার বোররচর ও পরাণগঞ্জ ইউনিয়নে সরেজমিনে দেখা যায়, বোররচর ইউনিয়নের কৃষকরা প্রতি বছরই টমেটো চাষ করেন। গত বছরও টমেটো থেকে তারা অনেক টাকা আয় করেছিলেন। এবারও কয়েক হাজার একর জমিতে টমেটো চারা রোপন করেন। চারা রোপনের দেড় মাসে খরচ হয় কয়েক লাখ টাকা। লাভের আশায় স্বপ্ন দেখলেও গত ১৫ দিন ধরে পচন ধরেছে ক্ষেতে।
ছোট ছোট ফুল ও ফলন হওয়া গাছগুলো বাঁচানোর জন্য অনেকের পরামর্শ নিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। বাকি জমির গাছ আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মরে শেষ হয়ে যাবে। ফসল চাষের জন্য সমিতি থেকে ঋণ তোলার চেষ্টা করছেন অনেকে। ঋণ না পেলে জমি অনাবাদি থাকবে।
৫৫ শতাংশ জমিতে টমেটো চাষ করেছিলেন বোররচর গ্রামের রেজাউল ইসলাম। তার খরচ হয়েছিল ৯০ হাজার টাকা। টমেটো গাছ মরে যাওয়ায় এখন জমিতে মরিচের চাষ করছেন। তিনি জানান, এখনও ৬০-৭০ হাজার টাকা খরচ হবে। তার অভিযোগ, এলাকার কৃষকদের শত শত একর জমির টমেটো নষ্ট হলেও কৃষি বিভাগের কাউকে পরামর্শের জন্য পাননি তারা।
কৃষক মাহবুবুল হক কাজল জানান, তাদের অঞ্চলের সবজির সুনাম রয়েছে সারাদেশে। তাদের এলাকার টমেটোর গাছ মরে যাওয়ায় দেশে সবজির সঙ্কট দেখা দেবে বলে মনে করেন তিনি। একই ধরনের মন্তব্য করে কৃষক আব্দুল হান্নান বোররচরের কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে সরকারের কাছে দাবি জানান।
ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. মতিউজ্জামান বলেন, বেশি বয়সের চারা রোপণ, টানা বৃষ্টি, একই জমিতে বারবার টমেটো চাষ এবং অতিরিক্ত মাত্রায় ইউরিয়া সার প্রয়োগের কারণে টমেটো গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তার ধারণা, সদর উপজেলার পরাণগঞ্জ এবং বোররচর ইউনিয়নে বিচ্ছিন্নভাবে পাঁচ হেক্টর জমির টমেটো নষ্ট হয়েছে।
সেসব ক্ষেতে বিকল্প সবজি চাষের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি সহযোগিতা করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন এ কৃষি কর্মকর্তা।
সান নিউজ/এসএ