নিজস্ব প্রতিনিধি, বরিশাল : ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশের প্রজনন নিরাপদ করতে সরকার অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে গত ১৪ অক্টোবর থেকে ২২ দিনের জন্য সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। বুধবার (৪ নভেম্বর) রাত ১২টায় শেষ হয় ২২ দিনের এই নিষেধাজ্ঞা।
ইলিশ শিকারে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে নতুন করে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে বরিশালের প্রধান প্রধান বাজারে। নিষেধাজ্ঞার ২২ দিন পর আড়তে চাহিদার তুলনায় ইলিশ অনেক কম। এজন্য দাম খুচরা বাজারে অনেক বেশী।
মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে, ডিম ছাড়ার পর ইলিশ নদী ছেড়ে সমুদ্রে চলে যায়। এ কারণে নদীতে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে কম। তবে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সমুদ্রের ইলিশ ফিরলে বেশীবেশী ধরা পড়লে দাম আরও কমবে আশা মৎস্য আড়ৎদারদের।
অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন নদী থেকে শিকার করা শত শত মন ইলিশ আসছে বরিশাল ইলিশের আড়তে। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার মন ইলিশ এসেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়িরা।
নগরীর পোর্ট রোড এলাকার আড়তদার জমির হাওলাদার বলেন, প্রতি বছর এই দিনে বরিশাল আড়তে অন্তত ৫ হাজার মন ইলিশ আসে। এসেছে প্রায় ১ হাজার মন ইলিশ। নিষেধাজ্ঞা পরবর্তী আড়তে ইলিশ এসেছে চাহিদার তুলনায় কম। এ কারণে ইলিশের দাম কিছুটা চড়া।
আড়তদার নাসির উদ্দিন জানান, আড়তে রপ্তানিযোগ্য এলসি সাইজ (৬০০ থেকে ৯০০ গ্রাম) প্রতি কেজি ইলিশ ৬০০ থেকে ৬২৫ টাকা, কেজি সাইজ প্রতি কেজি ৭০০ টাকা এবং ১ কেজি ২০০ গ্রাম সাইজের প্রতি ইলিশ পাইকরী বিক্রি হয়েছে ৭৫০ টাকা দামে।
জেলা মৎস্য আড়তদার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল বলেন, নিষেধাজ্ঞার আগের চেয়ে বরিশালে প্রতি মন ইলিশে ২ হাজার টাকা করে দাম কমেছে। আগামী কয়েক দিনে সমুদ্রের ট্রলারগুলো ফিরে আসলে ইলিশের সরবরাহ বাড়বে এবং তখন দামও কিছুটা কমবে আশা করছেন তারা।
তিনি বলেন, সরকারের আইনি বিধি-নিষেধের কারণে বাংলাদেশে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকার সারা বিশ্বে ইলিশ রপ্তানি উন্মুক্ত করে দিলে জেলে ও ব্যবসায়ীরা ইলিশের ন্যায্য মূল্য পাবে এবং সরকারও প্রচুর রাজস্ব আদায় করতে পারবে।
বরিশাল মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, এবার সকলের সহযোগিতায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা সফল হয়েছে। এ কারণে মা ইলিশ প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ডিম অবমুক্ত করতে পেরেছে অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে।
তিনি বলেন, ইলিশ ডিম ছাড়ার পর সমুদ্রে চলে যায়। এ কারণে নদ-নদীতে ইলিশ কম। আর নদীতে যে ইলিশ পাওয়া যায় সেগুলোর পেটেও ডিম নেই। নিষেধাজ্ঞা শেষে সমুদ্রে মাছ শিকারে যাওয়া ট্রলারগুলো ফিরে আসলে বাজারে ইলিশ সরবরাহ বাড়বে বলে আশা করেন এই মৎস্য কর্মকর্তা।
সান নিউজ/এসএ