নিজস্ব প্রতিনিধি, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) : ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটার গত ছয় বছর যাবত বন্ধ। আর দেড় দশক ধরে চালু করাই সম্ভব হয়নি এক্স-রে মেশিনটি। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালের ৭ মে অপারেশন থিয়েটার চালুর পর ২০১৪ সালের ১৯ আগস্ট এটি বন্ধ হয়ে যায়। অপারেশন থিয়েটারে কার্যক্রম চালু করার জন্য অনুমোদিত পদের বেশির ভাগই শূন্য। গাইনি কনসালট্যান্ট, এনেস্থিসিয়া, জুনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারী), মেডিটেক রেডিওলোজীর মত গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো শূন্য। আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় তার সুফল মিলছে না। ফলে ব্যাহত হচ্ছে মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সেবা।
এদিকে, এক্স-রে মেশিনটিও গত পনের বছর যাবত নষ্ট। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে মেশিনটি পাওয়ার পর আর চালু করাই যায়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ২০০৫ সালের ৯ জুন কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে এই এক্স-রে মেশিন (৩০০ এম/এ) প্রাপ্ত হলেও তা একদিনের জন্যও সচল করা সম্ভব হয়নি। মেশিনটি পাওয়ার পর স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে মেশিনটি স্থাপনের জন্য তাগিদ দেয়ার পর মেশিনটি প্রাপ্তির দুই বছর পর ২০০৭ সালের ৪ অক্টোবর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থাপন করা হয়। কিন্তু স্থাপনের পর ‘ইনটেন্সি ফাইন স্ক্রিন’ না থাকায় এক্স-রে মেশিনটি কার্যকর হয়নি। এরপর গত ২০০৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর তৎকালীন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নারায়ণ চন্দ্র সেন ব্যক্তিগত খরচে ‘ইনটেন্সি ফাইং স্ক্রিন’ ক্রয় করেন এবং বহুল প্রত্যাশিত এক্স-রে মেশিনটি ২০০৮ সালের ৫ নভেম্বর ব্যবহারযোগ্য হয়। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ওই দিনই মেশিনটি অকার্যকর হয়ে যায়। এরপর অসংখ্যবার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করলেও কোনও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. খালেদুর রহমান মিয়া বলেন, এক্স-রে মেশিন বেশ কিছুদিন ধরেই নষ্ট। নতুন একটি এক্স-রে মেশিন বরাদ্দ হয়েছে। গাইনি ও সার্জারী বিশেষজ্ঞ এবং এনেসথিওলজিস্টের অভাবে বর্তমানে সকল প্রকার অপারেশন বন্ধ রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এসব পদে চিকিৎসক পদায়ন করা হলে আমরা অপারেশনের জন্য প্রস্তুত।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডাইরেক্টর ডা. সহদেব রাজবংশী বলেন, বিষয়টি দু:খজনক। এটাতো অবশ্যই দেখতে হবে। এ ব্যাপারে আমি খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
সান নিউজ/কেএস/এসএম/এস