নিজস্ব প্রতিনিধি, নোয়াখালী : নোয়াখালী জেলা সদরের সোনাপুরের জনৈক আবুল খায়েরের স্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় তার ১৯৭১ এর ১৫ জুন পাকবাহিনীর হাতে নিহত স্বামী আবুল খায়েরকে মুক্তিযোদ্ধার ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে। সেটি মুক্তিযোদ্ধা সংসদে ও কল্যাণ ট্রাষ্টে জমা দিয়ে তার স্বামী আবুল খায়েরকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে সরকারের ২৮ লাখ ২২ হাজার টাকা আত্মসাত করে। এই অভিযোগে স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
নোয়াখালী দুদক সূত্রে জানা গেছে, নোয়াখালীতে ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে নিহত স্বামীকে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। এরপর ১৯৮৬ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় সম্মানী ভাতা, ঈদ বোনাস বাবদ সরকারী তহবিল থেকে ২৮ লাখ ২২ হাজার, ৭৮ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।
এ ব্যাপারে সোনাপুর এলাকার জনৈক গোলাম মোস্তফা নোয়াখালীর স্পেশাল জজ আদালতে একটি পিটিশন মামলা করলে আদালত পিটিশনটি গ্রহণ করেন এবং তা অনুসন্ধান করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে নোয়াখালী দুদকের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম অনুসন্ধান শুরু করেন। তার অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে যে, ১৯৭১ সালের ১৫ জুন দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার বাহিনী সোনাপুরে ও শ্রীপুরে গণহত্যা চালায়। এ গণহত্যায় আরও অনেকের সঙ্গে আবুল খায়েরও নিহত হন। এছাড়া তাদের বাড়ির আরও ৪ ব্যক্তিও নিহত হন। অনুসন্ধানে আবুল খায়ের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে যায়নি বা দেশেও কোনো প্রশিক্ষণ নেননি বা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। এমনকি মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো সহযোগিতার তথ্য উপাত্ত বা সাক্ষ্য পাওয়া যায়নি।
এ অনুসন্ধানী রিপোর্ট দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠানোর পর কমিশনের নির্দেশে জেলা দুদকের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বাদি হয়ে আবুল খায়ের এর স্ত্রী ফাতেমা খাতুনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বর্তমানে ওই নারী পলাতক রয়েছেন। এ ঘটনায় পরবর্তীতে অন্য কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদেরকেও আসামি করা হবে।
সান নিউজ/এসএ/এস