এনামুল কবীর, সিলেট : সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক ইনচার্জ, সাময়িক বরখাস্তকৃত পুলিশের এসআই আকবর ইস্যুতে সাধারণ নাগরিকদের ক্ষোভ বাড়ছে। আন্দোলন সংগ্রামের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদের দেখলেই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছেন। ধাওয়া করছেন, গাড়ি লক্ষ্য করে ছুঁড়ছেন ঢিলও।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানার আওতাধীন বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশী নির্যাতনে হাসপাতালে ১২ অক্টোবর সকালে মৃত্যুবরণ করেন নগরীর আখালিয়া-নেহারীপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে রায়হান আহমদ (৩৪)।
পুলিশ প্রথমে গণপিটুনিতে ছিনতাইকারী নিহত বলে চালিয়ে দিতে চাইলেও রায়হানের স্ত্রী তান্নি পরদিন দিবাগত মধ্যরাতে কোতোয়ালি থানায় পুলিশ হেফাজতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। প্রাথমিকভাবে পুলিশ বিভাগীয় ব্যবস্থা হিসাবে বন্দরবাজার ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ এসআই আকবরসহ মোট ৪ জনকে সাময়িক বরখাস্ত ও ৩ জনকে প্রত্যাহার করে।
এর পরপরই সিলেটজুড়ে শুরু হয় প্রতিবাদ-আন্দোলন-বিক্ষোভ। পালিয়ে যান বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়া। এ সংবাদে আন্দোলনের আগুনে যেনো ঘি ঢেলে দেয়। মানববন্ধন-সড়ক অবরোধ চলতে থাকে সমানতালে।
এরই ধারাবাহিকতায় রায়হানের নিজের এলাকা হিসাবে পরিচিত আখালিয়া নেহারীপাড়ায় তার পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী মিলে গত ১৫ অক্টোবর বিকেলে সিলেট সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করেন।
এক পর্যায়ে জালালাবাদ থানার টহল পুলিশের ৩ সদস্য তাদের সরাতে গেলে ক্ষিপ্ত বিক্ষোভকারীরা ধাওয়া করেন। কয়েকজন বেপরোয়াভাবে পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে জুতা ছুঁড়ে মারেন। ঐ তিন পুলিশ সদস্য দৌড়ে রাস্তার অপর পাশের একটি দোকানে গিয়ে আশ্রয় নিলে কর্মচারী ও মালিক তাদের আশ্রয় দেন। পরে তারা নিরাপদে ফিরে যান।
এরপর মঙ্গলবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। নগরীর কোর্ট পয়েন্টে সিলেট ব্যবসায়ী ঐক্যকল্যাণ পরিষদের মানববন্ধন থেকেও হামলা চালানো হয় পুলিশের একজন কর্মকর্তার গাড়িতে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মানববন্ধন চলাকালে সামনে দিয়েই যাচ্ছিলো এসএমপির এসি (প্রসিকিউশন) অমূল্য কুমার চৌধুরীর গাড়ি। সাথে সাথে বিক্ষুব্ধ জনতা গাড়িতে ইটপাটকেল ছুঁড়তে শুরু করেন। কেউ কেউ তেড়ে গিয়েছিলেন আরো বড় কিছু ঘটাতে। এতে অবশ্য কেউ আহত হননি।
তবে এ ঘটনার পর পুলিশের উপর হামলার আশঙ্কা করছেন সচেতন নাগরিকদের কেউ কেউ। তাদের ধারনা, আকবর গ্রেপ্তারে যতো দেরি হবে, জনগনের রাগ-ক্ষোভ ও বিক্ষোভ তত বাড়তে থাকবে। তখন এ জাতীয় ঘটনা আরো বাড়ার বিষয়টি উড়িয়ে দিচ্ছেন না তারা।
দুটি ঘটনার সত্যতাই স্বীকার করেছেন মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম কর্মকর্তা বিএম আশরাফ উল্লাহ তাহের। তবে মঙ্গলবারের ঘটনাকে হামলা বলতে নারাজ তিনি। কোর্ট পয়েন্টে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ঢিল ছোঁড়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন এসএমপির এ উর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
সান নিউজ/এক/এস