কামরুজ্জামান স্বাধীন, উলিপুর (কুড়িগ্রাম) : কুড়িগ্রামের উলিপুরে জুম্মাহাট হাফিজিয়া ক্বারীয়ানা মাদ্রাসা আদর্শ এতিমখানা ও লিল্লাহ্ বোর্ডিং এর জন্য বরাদ্দকৃত লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযাগ দায়ের করা হয়েছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনা ফাঁস হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বইছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে উপজেলার গুনাইগাছ জুম্মাহাট হাফিজিয়া ক্বারীয়ানা মাদ্রাসা আদর্শ এতিমখানা ও লিল্লাহ্ বোর্ডিং এর তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব, ক্যাশিয়ার তাজুল ইসলাম ও ক্বারী হাবিবুর রহমান স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে মাদ্রাসার লাখ লাখ টাকা তছরুপ করে।
এ বিষয়ে কমিটির অন্যান্য সদস্যগণ প্রতিবাদ করলে আবু তালেব ও তার লোকজন তাদরকির বিষয়টি গুরত্ব না দিয়ে নানা ভাবে হয়রানী করে। এক পর্যায়ে আবু তালেব তার পক্ষের লাকজন দিয়ে ২ ডিসম্বর ২০১৮ইং তারিখে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে গোপন কমিটি গঠন করে। এবং কৌশলে নতুন কমিটির বিষয়টি উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে অবহিত না করে পূর্বের কমিটির মাধ্যমে ২০১৯ সালের ক্যাপিটিশনের ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে তুলে আত্মসাৎ করে। অর্থ উত্তোলনের বিষয়টি নতুন কমিটি জানতে পেরে তদারকির জন্য ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি নিরীক্ষণ কমিটি গঠন করেন। নিরিক্ষণ কমিটি তদন্তকালে অর্থ আত্মসাতের বিষয়টির দালিলিক প্রমাণ পান।
নতুন কমিটির মেয়াদ শেষ হলে সভাপতি গোলাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবু তালেবের যোগসাজশে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বাড়িতে বসে কমিটি গঠন করে চলতি বছরের ক্যাপিটিশনের ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যম ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করে। এছাড়া ওই প্রতিষ্ঠানর প্রায় দেড় একর জমি ৫ লাখ টাকা বন্ধক এবং মাদ্রাসার ৩২টি ইউক্লিপ্টাস গাছ ৪১ হাজার ৫’শ টাকায় বিক্রি করে হিসাব না দিয়েই সভাপতি ও সাদারণ সম্পাদক আত্মসাৎ করেন।
অভিযোগ রয়েছে, ওই এতিমখানায় কাগজ কলমে ৩০জন এতিম শিক্ষার্থী দেখানো হলেও বাস্তবে রয়েছে ১১ জন। এছাড়াও এতিম শিশুদের জন্য খাদ্য বাবদ ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও ডাল-সবজি ছাড়া তাদের ভাগ্যে কিছুই জোটেনি। পোশাকের জন্য ৪৬ হাজার ৮’শ টাকা বরাদ্দ থাকলেও তা থেকে বঞ্চিত রয়েছে এতিমরা।
এই বিষয়ে জানতে জুম্মাহাট হাফিজিয়া ক্বারীয়ানা মাদ্রাসার সাধারণ সম্পাদক আবু তালেবের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে কোষাধক্ষ্য তাজুল ইসলাম মোবাইল ফোনে অভিযোগটিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবী করেন।
প্রতিষ্ঠানের সভাপতি গোলাম হোসেন জানান, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযাগ সঠিক নয়। একটি চক্র তাকে জড়িয়ে এমন মিথ্যা অভিযোগ করছেন।
উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকতা মশিউর রহমান বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
সান নিউজ/কেএস/এস