মামুন, জয়পুরহাট প্রতিনিধি:
নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে জয়পুরহাটের ছোট যমুনা ও তুলশীগঙ্গা নদী থেকে চলছে বালু উত্তোলন। নদীর একেবারে পাড় ঘেসে অবৈধ ড্রেজারের সাহায্যে তোলা হচ্ছে বালু। এতে প্রতি নিয়ত ভাঙছে নদীর পাড়ের ফসলী জমি। ভাঙনের আতঙ্কে নদী তীরের বাসিন্দারা।
সরকারের কাছ থেকে ইজারা নিলেও ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা সম্পূর্ণ অবৈধ। তবুও ইজারাদাররা মানছে না কোন আইন কানুন। পেশিশক্তির জোরে কেবল নদী থেকে নয়, খেয়াল খুশি মতো অনেকের আবাদি জমি থেকেও তোলা হচ্ছে বালু।
ড্রেজার দিয়ে বালু তোলার কাজটি বেশি চলছে জয়পুরহাটের পাচঁবিবি উপজেলার শীমলতলী, সদর উপজেলার পুরানাপৈল এলাকায়। জেলার অন্তত ১৫টি স্থানে ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এলাকার কৃষি জমি। গত এক বছরে প্রায় একশ বিঘা জমি হারিয়ে গেছে নদী গর্ভে। কৃষকদের ক্ষতি হয়েছে কোটি কোটি টাকা।
বালু উত্তোলনে বাঁধা দিতে গেলে জমির মালিকদের হুমকি ধমকি দিচ্ছে প্রভাবশালী এসব ইজারাদাররা। কোনকোন জমির মালিককে নাম মাত্র টাকা দিলেও অনেকের কাছ থেকে জোর করে নিচ্ছে জমির বালু। টাকা চাইতে গেলে ইজারাদারদের সন্ত্রাসী বাহিনীর কাছে লাঞ্ছিত হতে হচ্ছে ভুক্তভোগিদের। ভয়ে অনেকে আবার প্রতিবাদই করতে পারছেন না। ইজারাদারদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন নদীর পাড়ের বাসিন্দারা।
জয়পুরহাটের ছোট যমুনা ও তুলশীগঙ্গা নদী দুই পাড়ের বাসীন্দাদের কাছে ড্রেজার এখন এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। বাড়ি বা জমির আশেপাশে ড্রেজার বসাতে দেখলেই নির্ঘুম রাত কাটছে স্থানীয়দের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা জানান, প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করলে কিছুদিন বালু উত্তোলন বন্ধ থাকে। কয়েকদিন পর আবারও শুরু হয়। কোনভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না তাদের। বেশ কয়েকবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেও থামছে না অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কাজ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ইজারাদাররা বলেন, আমরা বালুর ঘাট টাকা দিয়ে ইজারা নিয়েছি। আর যেসব কৃষকরা অভিযোগ করছে, তা ঠিক নয়। যাদের জমি থেকে বালু উত্তোলন করা হয়েছে তাদের জমির বালু কিনে নিয়েছি।
পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাদিম সরোয়ার বলেন, ড্রেজার দিয়ে বালু তোলার কোন বিধান নাই। যারা ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ব্যক্তি মালিকানা জমি থেকে বালু তোলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কেউ এখনও আমার কাছে অভিযোগ জানায়নি, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।