নিজস্ব প্রতিনিধি, বরিশাল : করোনার বরাদ্দের টাকা আত্মসাত করায় মঠবাড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যানের বিচার চাইলেন তার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী। মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবী তোলেন গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হোসাইন মোশারেফ সাকু।
তিনি বলেন, আমি সৌদি আরব আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলাম। দলীয় পরিচয় নয়, মঠবাড়িয়ার একজন বাসিন্দা হিসেবে অসহায় মানুষের জন্য করোনাকালীন যে বরাদ্দ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন তা আত্মসাত করার এখতিয়ারতো উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজউদ্দিনের নেই। সেই আত্মসাতকারী উপজেলা চেয়ারম্যানের বিচার চাই।
উপজেলা চেয়ারম্যান দরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য বরাদ্দকৃত জীবানুনাশক ব্লিচিং পাউডার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হ্যান্ড গ্লোবস, মাক্স, এন্টিসেফটিক সাবানসহ করোনা প্রতিরোধমূলক মালামাল ক্রয় করেননি। উল্টো বরাদ্দের পাঁচ লাখ ৮৯ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন।
হোসাইন মোশারেফ সাকু অভিযোগ করে বলেন, করোনাকালীন বরাদ্দের টাকা উত্তোলন করতে হলে একটি কমিটি গঠন করতে হবে। টাকা উত্তোলনে রেজুলেশন করতে হবে। কিন্তু এসব কিছু না করেই একটি আলোচনা সভা ডেকে তার মাধ্যমে দায়সারা জানান দিয়ে দপ্তরের কর্মকর্তাসহযোগে নিজে আত্মসাত করেছেন।
মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনা রয়েছে, ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে ব্যয় বিবরণী জমা দেওয়ার। কিন্তু ব্যয় বিবরণী জমা না দিয়ে ৮ জুন উপজেলা দপ্তরে মাসিক সভা ডেকে ৪ লক্ষ ৮৯ হাজার টাকার কথা উত্থাপন করেন। বাকি এক লাখ টাকার কোন প্রসঙ্গ আনেননি।
তবে আলোচনা সভায় চেয়ারম্যানের উত্থাপিত করোনাকালীন টাকা কোথায় ব্যয় হয়েছে তা চেয়ারম্যানরা জানতে চাইলে রিয়াজউদ্দিন জানান দেড় লাখ টাকায় ৩টি কম্পিউটার ক্রয় করা হয়েছে। করোনার বরাদ্দের টাকা দিয়ে কম্পিউটার ক্রয় করা বড় ধরণের দুর্নীতি। সংবাদ সম্মেলনে সাকু দাবী করেন, মুখে কম্পিউটার ক্রয়ের কথা বললেও আসলে কিছুই ক্রয় করেননি চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, রিয়াজ উদ্দিনের নেতৃত্বে মঠবাড়িয়ায় আওয়ামী লীগের শত শত নেতাকর্মীদের কুপিয়ে, পিটিয়ে নির্যাতন চালিয়ে পঙ্গু করে দিয়েছেন। রিয়াজ বাহিনীর ভয়ে সরকারী-বেসরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সাধারণ মানুষ মঠবাড়িয়ায় স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছে না।
রিয়াজ উদ্দিন উপজেলা বিএনপি সভাপতির নাতি বিয়ে করে বিএনপি-জামায়াতের আমলে বহু হিন্দুদের বাড়ি-ঘর দখল করেছেন। এ নিয়ে আদালতে মামলা বিচারাধীন। এমনকি দুর্নীতির কারনে চলতি বছর রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদের চেয়ারম্যান থাকার যথার্থতা নিয়ে রুল জারি করেছে উচ্চ আদালত।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের যুবলীগ সভাপতি রাসেল হাওলাদার, টিকিকাটা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ইয়াসিন হোসেন, তাতীলীগ সভাপতি আঃ গফফার প্রমূখ।
সাকুর অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদের মোবাইল নাম্বারে একাধিক বার কল, মেসেজ পাঠিয়েও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি। বরংছ তিনি মোবাইল রিসিভ না করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন।
সান নিউজ/এম/এস