নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল : বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ৪ জন শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে বরিশালের স্থানীয় কয়েক যুবকের বিরুদ্ধে।
বুধবার (৭ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টায় ধর্ষণবিরোধী প্রদীপ মিছিল শেষে বাসায় ফিরছিলেন ওই চার শিক্ষার্থী। পথে প্রায় ৭ জন মোটরসাইকেল আরোহী ক্যাম্পাসের দপদপিয়া ব্রিজের টোলপ্লাজা থেকে রুপাতলী হাউজিংয়ের ৮নং সড়কে নিয়ে তাদের আটকে রাখেন।
শিক্ষার্থীরা হলেন- ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী আনিকা সরকার সিথী এবং উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী সৈয়দা ফেরদৌস জেবা, মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী শুয়াইব ইসলাম স্মরণ, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী রাকিব মাহমুদ।
অভিযুক্ত রাহিম মাহমুদ, আবীর, লিমন ঝালকাঠি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী বলে জানিয়েছেন বরিশাল কোতোয়ালি থানার এসআই মাহমুদুল মুনিম। বাকিদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণবিরোধী প্রদীপ মিছিলে এক মোটরসাইকেল আরোহী মিছিলের মধ্যে মোটরসাইকেল নিয়ে হঠাৎ ঢুকে পড়ে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান হাসিব আহত হন। এরপর মোটরসাইকেল আরোহী ও তার সাথে থাকা একজনকে ক্যাম্পাসের দায়িত্বরত পুলিশ আটক করে। প্রদীপ মিছিল শেষ হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের সামনে এলে ক্যাম্পাস ফাঁড়ির দায়িত্বরত পুলিশ দুই পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে তাদেরকে ছেড়ে দেয়।
কর্মসূচি শেষে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে দপদপিয়া ব্রিজের উপর গেলে আনুমানিক রাত সাড়ে ৮টায় মোটর বাইকাররা তাদের জোরপূর্বক রুপাতলি নিয়ে আটকে রাখে। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে আটকে রেখে নারী দুই শিক্ষার্থীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ এবং ছেলে শিক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করার অভিযোগ করেন তারা।
শিক্ষার্থী আনিকা সরকার সিথী তাদের থেকে লুকিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেইসবুক গ্রুপে তাদের আটকে রাখার বিষয়ে পোস্ট দিলে মাহমুদুল হাসান তমাল, সজল, হাসিব, সাওনসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে তাদের সাথে যুবকদের বাগবিতণ্ডা চলতে থাকে।
এ সময় দলে দলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রুপাতলি আসতে থাকলে মোটরবাইক ফেলে বখাটেরা পালিয়ে যায়। এ সময় একজনকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত বরিশাল কোতোয়ালি থানার এসআই মাহমুদুল মুনিম মুঠোফোনে জানান, শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে লিখিত কোনো অভিযোগ না থাকায় অভিযুক্তকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা আইনি পদক্ষেপ নেবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সুব্রত কুমার দাস জানান, ঘটনা শোনার সাথে সাথেই থানায় ফোন করে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। ঘটনার বিস্তারিত আমি এখনো জানতে পারিনি। রাতের আঁধারে নারী শিক্ষার্থীদের সাথে এমন অপ্রীতির ঘটনায় ভুক্তভোগীদের নিয়ে প্রশাসনিকভাবে পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানান তিনি।
সান নিউজ/এসএমএইচ/এস | Sun News