দিনাজপুরে লিচু মৌসুম শুরু হতে যাচ্ছে। গাছে ঝুলছে লিচুর গুটি, আর মাত্র দুই সপ্তাহ পর লাল-গোলাপি টসটসে লিচু বাজারে আসবে। আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূলে থাকলেও এবার লিচুর ফলন জাতভেদে কিছুটা কম হবে বলে জানিয়েছেন লিচু চাষীরা।
মাদ্রাজী জাতের লিচুতে ফলন ভালো হলেও বোম্বাই জাত নিয়ে হতাশ চাষীরা। বিরল উপজেলার লিচু চাষী ফিরিজুল ইসলাম বলেন, বোম্বাই লিচুর ফলন ৪০ শতাংশ কম। তবে মাদ্রাজী লিচুর দাম ভালো পাব বলে আশা করছি। গতবছর প্রতি হাজার লিচু ২২০০ টাকায় বিক্রি করেছি। এবারও বাজার ভালো যাবে।
জেলার ৫,৫২০ হেক্টর জমিতে ৯,৯৮টি বাগানে লিচু চাষ হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি বাগান বিরল উপজেলায়। এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৪,৬২৮ মেট্রিক টন।
দিনাজপুরে মাদ্রাজী, বেদানা, হাড়িয়া বেদানা, বোম্বাই, চায়না থ্রি, চায়না টু, কাঁঠালি এবং মোজাফফরি জাতের লিচু চাষ হয়। মাদ্রাজী ও বোম্বাই লিচু বেশি জনপ্রিয়। তবে চাষীরা বলছেন, লিচুর বৈশিষ্ট্যের কারণে প্রতি বছর একইরকম ফলন হয় না।
বিগত ১২ দিনে ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হওয়ায় চাষীদের সেচের প্রয়োজন কমেছে। বিরল উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা হাসান ইমাম বলেন, তাপমাত্রা কম থাকায় পোকার আক্রমণ ও ঝরে পড়ার হার কম। আবহাওয়ার এ ধারা অব্যাহত থাকলে লিচুর আকার বড় হবে এবং মিষ্টি বাড়বে।
বিগত দুই বছরে দিনাজপুর থেকে ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড এবং ইংল্যান্ডে ৪০ হাজার পিচ লিচু রপ্তানি হয়েছে। এতে কৃষকদের যত্ন এবং পরিচর্যা বিষয়ে সচেতনতা বেড়েছে।
লিচু ব্যবসায়ী শাহীন আলম বলেন, বর্তমান বাজার ব্যবস্থাপনায় সমস্যা হচ্ছে। শহরের কালিতলা এলাকায় বসা বাজারটি যানজট সৃষ্টি করে। এটি গোর-এ-শহীদ মাঠে স্থানান্তর করলে ট্রাক প্রবেশ সহজ হবে এবং চাষীরা সঠিকভাবে লিচু বিক্রি করতে পারবেন।
আগামী ১০-১৫ মে মাদ্রাজী লিচুর মাধ্যমে মৌসুম শুরু হবে। এর পর পর্যায়ক্রমে বোম্বাই, বেদানা, চায়না থ্রি এবং সবশেষে হাড়িয়া বেদানা, কাঁঠালি ও মোজাফফরি বাজারে আসবে। চাষী ও ব্যবসায়ীরা জানান, অনুকূল আবহাওয়া অব্যাহত থাকলে এবার লিচুর মৌসুমে হাসিমুখ থাকবে সবার।
সাননিউজ/ইউকে