নিজস্ব প্রতিবেদক :
কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের সংঘর্ষে আবারও ৪ রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। এ সময় আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। হামলা নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে আনসারের এক সদস্যও আহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার রাতে কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, উখিয়ার কুতুপালং লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র নতুন ও পুরাতন রোহিঙ্গাদের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজন গুলিবিদ্ধ ও একজনকে গলাকাটা অবস্থায় পাওয়া গেছে। ওই ক্যাম্পে বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে গত ৪ ও ৫ অক্টোবর দু’পক্ষের সংঘর্ষে ৩ জন রোহিঙ্গা নিহত হন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে র্যাব অভিযান চালিয়ে ৯ রোহিঙ্গা ডাকাতকে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক করে। সপ্তাহ ধরে চলমান এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৭ জন রোহিঙ্গার লাশ উদ্ধার করা হলো।রোহিঙ্গা ক্যাম্প সূত্র জানায়, কুতুপালংয়ের অদূরবর্তী গভীর জঙ্গলে লম্বাশিয়া ক্যাম্পের সশস্ত্র মুন্না গ্রুপের সেকেন্ড ইন কমান্ড গিয়ার উদ্দিকে তার প্রতিপক্ষ বাহিনী পিটিয়ে হত্যা করেছে।এ সময় ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে গিয়াস উদ্দিনের মা-বাবাও ঘটনাস্থলে মারা যান। এদিকে উত্তেজিত রোহিঙ্গারা মুন্না গ্রুপের আরেক সদস্যকে জবাই করে হত্যা করেছে।
লম্বাশিয়া ক্যাম্পের আজিজুল হক, ছৈয়দ নুর ও শামশুজ্জোহা নামের তিন রোহিঙ্গা জানিয়েছেন, গিয়াস উদ্দিন ও তার বাবা-মার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর লম্বাশিয়া ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা সুনসান নীরবতা। গ্রেফতার আতংকে অনেকেই পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছে বলেও দাবি করেন তারা।উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা কুতুপালং আশ্রয় নিলে জায়গা সংকুলনা না হওয়ায় বেশ কিছু রোহিঙ্গাকে উখিয়ার গভীর জঙ্গলখ্যাত লম্বাশিয়ায় পুনর্বাসন করে। সেখানে মুন্না গ্রুপ গড়ে তুলে একটি সশস্ত্র বাহিনী।এ বাহিনীর মাধ্যমে মুন্না গ্রুপ চাঁদাবাজি, খুন, অপহরণ, ছিনতাই, ডাকাতি ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে আসছিল। অপহরণ করে মোটা অংকের মুক্তিপণ আদায় ছিল তার প্রধান বাণিজ্য। তার কথামতো টাকা না দিলে জবাই করে হত্যা করা হতো,নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক রোহিঙ্গা জানিয়েছেন।
সান নিউজ/পিডিকে