জেলা প্রতিনিধি: গাজীপুরে পৃথক ঘটনায় ৩ জনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণ ছয়দানার হাজির পুকুর এলাকার একটি বসত ঘর থেকে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটে মারা যাওয়া তরুণ-তরুণীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: পাচারকালে রোহিঙ্গা তরুণী আটক
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে দক্ষিণ ছয়দানার হাজির পুকুর এলাকার বিল্লাল মিয়ার ভাড়া বাড়ির একটি কক্ষ থেকে বুকে জড়িয়ে ধরা অবস্থায় থাকা দুই তরুণ-তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতরা হলেন, সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ থানার সিমলা গ্রামের বাবুল শেখের ছেলে মোহাম্মদ বিল্লাল শেখ (২৫) ও গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানার বীরপুরন্দ গ্রামের আব্দুল জব্বারের মেয়ে শ্যামলী আক্তার (২৭)।
জানা গেছে, গাজীপুর মহানগরের ছয়দানা এলাকার আক্তার মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থেকে দর্জির কাজ করতেন বিল্লাল শেখ। ওই বাড়ির পাশেই বিল্লাল মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থেকে প্রীতি সোয়েটার লিমিটেড নামের একটি পোষাক তৈরি কারখানায় কাজ করতেন শ্যামলী আক্তার। দীর্ঘদিন ধরে শ্যামলী ও বিল্লাল শেখের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। বিল্লাল শেখ গত সোমবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময়ে শ্যামলীর ভাড়া কক্ষে যান। মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে পাশের কক্ষের ভাড়াটিয়া জুয়েল মিয়া পাশে থাকা শ্যামলীর রুমের দরজা আংশিক খোলা দেখতে পেয়ে দরজায় ধাক্কা দেন। এ সময় তাদের একে-অন্যের সঙ্গে জড়ানো এবং গলায় ও হাতে বৈদ্যুতিক তার পেঁচানো অবস্থায় দেখতে পেয়ে ডাক-চিৎকার শুরু করেন তিনি। পরে আশপাশের অন্য ভাড়াটিয়ারা ছুটে এসে তাদের মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রশাসনের সাজেক ভ্রমণে নিরুৎসাহ
অন্যদিকে, গাছা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুমন মিয়া স্থানীয়দের বরাত দিয়ে বলেন, নিহত শ্যামলীর স্বামী ও সন্তান আছে। সম্প্রতি তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে। বর্তমানে সে গাজীপুরের ছয়দানা এলাকার একটি পোষাক তৈরি কারখানায় চাকরি করেন। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে স্থানীয় বিল্লালের বাড়িতে বাসা ভাড়া নেন। সেখানে চাকরি করার সুবাদে দর্জি মোহাম্মদ বিল্লাল শেখের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। কারণ প্রেমের সম্পর্ক না থাকলে কোনো মেয়ের ঘরে একজন ছেলে যেতে পারেন না। মঙ্গলবার সকালে আশপাশের প্রতিবেশীর ডাক-চিৎকারের শব্দ শুনতে পেয়ে ঘরের দরজা ধাক্কা দিয়ে ভেতরে গিয়ে মরদেহ দেখতে পায় তারা।
এদিকে মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল আনুমানিক ৬টার দিকে গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভাজকের ওপরে মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে খবর দেয়।
নিহত আবু বক্কর (২৫) ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা থানার গরজা গ্রামের আব্দুল জলিলের সন্তান।
নিহতের ভাই আ. হালিম বলেন, তারা দুই ভাই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাঘের বাজার এলাকার ফুটওভার ব্রিজে থেকে আশপাশের এলাকায় বোতল সংগ্রহ করতো। তার ছোট ভাই আবু বক্কর মানসিক রোগী ও মাদকাসক্ত ছিলেন।
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। ভিকটিমের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সান নিউজ/এএন