জেলা প্রতিনিধি: টানা ভারী বৃষ্টিতে কক্সবাজার শহরের বেশিরভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে হয়েছে। সৈকত এলাকার হোটেল-রিসোর্ট, কটেজ জোনে জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন পর্যটকেরা। ৫ শতাধিক হোটেল-মোটেলে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েক হাজার পর্যটক আটকা পড়েছেন।
আরও পড়ুন: হাতিয়ায় মাছ ধরার ৭ ট্রলার ডুবি
বৃষ্টিতে শহরের প্রধান সড়ক, সৈকত সড়কসহ অন্তত ৩৫টি উপসড়ক বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। এতে কয়েকশো দোকানের মালামাল নষ্ট হয়েছে। হাজারো ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন সেখানকার মানুষেরা। সব মিলিয়ে জনজীবনে নেমেছে স্থবিরতা।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে শুক্রবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ৫০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে একদিনে যা সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে। বাতাসের তীব্রতাও বেশি থাকবে, যা দমকা ও ঝোড়ো হাওয়া আকারে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে বাড়তে পারে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের কলাতলী হোটেল-মোটেল জোনের প্রধান সড়কটি বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। সড়কের দুপাশের ৫ শতাধিক হোটেল গেস্ট হাউসে যাতায়াতের অভ্যন্তরীণ ১০টি উপসড়কও প্লাবিত হয়েছে। এতে অন্তত ২০ হাজার পর্যটক হোটেলে আটকা পড়েন। কলাতলী সড়ক থেকে সমুদ্র সৈকতে নামার সুগন্ধা সড়কটিও ডুবে আছে। সড়কে হাতে গোনা কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চলাচল করলেও সেগুলো অলিগলিতে ঢুকতে পারছে না।
ঢাকা থেকে ঘুরতে যাওয়া একজন পর্যটক জানিয়েছেন, তারা সপরিবারে পাঁচজন গত বুধবার কক্সবাজারে বেড়াতে যান। শুক্রবার ঢাকায় ফেরার কথা ছিল। কিন্তু জলাবদ্ধতার কারণে তারা হোটেলে আটকা পড়েছেন।
আরও পড়ুন: সড়ক দুর্ঘটনায় সেনাসদস্য নিহত
এলাকাবাসী বলছেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বৃষ্টিপাত শুরু হলেও ভারী বর্ষণ শুরু হয় দুপুর ২টা থেকে। এরপর শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত টানা ভারী বর্ষণে পুরো শহরের আট লাখ মানুষের কর্মজীবন স্থবির হয়ে পড়ে। গত ৫০ বছরেও এমন ভারী বর্ষণ দেখেননি। ভারী বর্ষণের ফলে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ১০টি পাহাড়ে ফাটল দেখা দিয়েছে। বেশ কিছু অংশে ভূমিধসের ঘটনাও ঘটছে।
গেস্টহাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ বলেন, দীর্ঘ দুই মাস পর ১০ সেপ্টেম্বর থেকে সৈকতে পর্যটক আসতে শুরু করেছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকায় শুক্রবার অন্তত এক লাখ পর্যটক সমাগমের আশা ছিল। কিন্তু বৈরী পরিবেশে অধিকাংশ পর্যটক বুকিং বাতিল করেছেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থান থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ৪ টি পৃথক টিম মাঠে কাজ করছেন।
সান নিউজ/এএন