জেলা প্রতিনিধি: বগুড়া কারাগারের কনডেম সেলের ছাদ ফুটো করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৪ আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে প্রধান কারারক্ষী দুলাল হোসেনসহ ৩ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: স্ত্রীর গলাকেটে স্বামীর আত্মহত্যা
বুধবার (২৬ জুন) রাতে বরখাস্তের বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন জেল সুপার আনোয়ার হোসেন।
সাময়িক বরখাস্ত অন্য দুই কারারক্ষী হলেন- আবদুল মতিন ও আরিফুল ইসলাম। এছাড়াও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে, কারারক্ষী ফরিদুল ইসলাম ও হোসেনুজ্জামান।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার থেকে জেলা প্রশাসন ও ডিআইজি প্রিজনের গঠিত পৃথক কমিটি ঘটনার তদন্ত শুরু করে। এর আগে দুপুরে এ ঘটনায় বগুড়া জেলা প্রশাসকের গঠিত ৬ সদস্যের এবং অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক শেখ সুজাউর রহমান সুজার নেতৃত্বে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
পুলিশ সূত্র জানায়, আসামিরা নিজেদের বিছানার চাদর ছিঁড়ে দড়ি বানায়। এরপর গামছার ভেতর শক্ত কিছু ভরে কৌশলে কারাগারের ছাদ ফুটো করে সেলের বাইরে বের হয়। আগে থেকে বানানো বিছানার চাদরের দড়ি দিয়ে কারাগার ভবন থেকে নিচে নামেন। এরপর ওই ৪ জন কারাগারের পূর্ব পাশে করতোয়া নদীর ওপর ছোট ব্রিজের নিচ দিয়ে পালিয়ে যান। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টা ৫৬ মিনিটে খবর আসে বগুড়া জেলা কারাগার থেকে ৪ জন মৃত্যুদণ্ড সাজাপ্রাপ্ত আসামি পালিয়ে গেছেন। খবর পাওয়া মাত্র বগুড়া সদর থানা ও ফাঁড়ির পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠে। শহরের বিভিন্নস্থানে একাধিক অভিযান পরিচালনা করা হয়। এরই এক পর্যায়ে ভোর ৪টা ১০ মিনিটের দিকে সদরবাড়ীর উপ-পরিদর্শক (এসআই) খোরশেদ আলম শহরের চেলোপাড়ায় করতোয়া নদীর পাড়ে চাষি বাজার থেকে চার জনকে গ্রেপ্তার করেন।
আরও পড়ুন: ভালুকায় বাস খাদে পড়ে নিহত ১
কারাগার থেকে পালানো ৪ আসামির একজন জাকারিয়া। তিনি কাহালু পৌরসভার মেয়র আব্দুল মান্নানের ছেলে। মান্নান কাহালু উপজেলা বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। ২০১২ সালের ৫ এপ্রিল কাহালুর রোস্তম চাপড় গ্রামের রফিকুল ইসলামের স্কুলপড়ুয়া ছেলে নাঈমুল ইসলাম নাঈমকে (১৩) অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় ও হত্যাকাণ্ডের দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন জাকারিয়া।
নাঈম হত্যা মামলার বরাত দিয়ে কাহালু থানা পুলিশ জানান, নাঈমকে আসামি জাকারিয়া ও তার সহযোগীরা মিলে অপহরণ করেন। পরে তার মুক্তিপণ বাবদ ৫ লাখ টাকা দাবি করা হয় পরিবারের কাছে। টাকা না পেয়ে শিশুটিকে ইটভাটায় পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় মামলার পর ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি বগুড়ার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক হাফিজুর রহমান রায় ঘোষণা করেন। রায়ে জাকারিয়া ও তার সহযোগী ডালিমকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বাকি ৩ আসামি হলেন- কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী থানার আজিজুল হকের ছেলে মো. নজরুল ইসলাম মঞ্জুর (৬০), বগুড়া জেলার সদর থানার মো. ইসমাইল শেখের ছেলে মো. ফরিদ শেখ (২৮) ও নরসিংদী জেলার মাধবদী থানার ইসরাফিল খাঁর ছেলে আমির হামজা (৩৮)।
সান নিউজ/এএন