জেলা প্রতিনিধি: গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলায় কলেজের র্যাগ ডে উৎসবকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের ২ গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার জেরে মো. আল আমিন (১৯) নামের ১ শিক্ষার্থীকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার ঘটনায় কালিয়াকৈর পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন: গাড়ির ধাক্কায় যুবক নিহত
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) দুপুরের দিকে উপজেলার চন্দ্রা এলাকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত শিক্ষার্থী, কালিয়াকৈর উপজেলার বরিয়াবহ গ্রামের মোতালেব মিয়ার ছেলে ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কলেজের ডিগ্রি ১ম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
পুলিশ ও শিক্ষার্থীরা জানায়, বুধবার (৫ জুন) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদ কামাল ওরফে সোহানের নেতৃত্বে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য র্যাগ ডে পালন করা হয়। এই অনুষ্ঠানের দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রভাষক আবু হেনা সাজেদুল আলম ও আবুল কালাম আজাদসহ আরো কয়েকজন শিক্ষককে। এ সময় তাদের সামনেই দিনব্যাপী কলেজ ক্যাম্পাসে উচ্চশব্দে মাইক বাজিয়ে হৈ হুল্লা করেন শিক্ষার্থীরা। এই অনুষ্ঠানে শতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দেয় সোহান ও তার সহযোগীরা। একপর্যায়ে কলেজের ডিগ্রি ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থীদের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তারা। এই সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: ট্রাকের ধাক্কায় নিহত ২
ঐ ঘটনার জের ধরে বৃহস্পতিবার(৯ জুন) দুপুরে পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি ও কলেজের ডিগ্রি ৩য় বর্ষের ছাত্র ইমন খান, তার সহযোগী সাকিব হৃদয়, আকাশ ও হাসানসহ (১০-১২) জন শিক্ষার্থী কলেজ ক্যাম্পাসের মাঠে ডিগ্রি ১ম বর্ষের ছাত্র আল আমিন ও কামরুলকে দেখতে পেয়ে ধাওয়া করেন। এই সময় তারা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেলে কলেজের পশ্চিম পাশে ডাইনকিনি সড়কে শাহ মখদুম মার্কেটের সামনে পড়ে যায় তারা। এরপর পৌর ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও শিক্ষার্থীরা তাদেরকে এলোপাতাড়ি মারধর ও কুপিয়ে জখম করেন। তার পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: ওমানে বাংলাদেশি যুবকের মৃত্যু
তখন আহতদের উদ্ধার করে কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক আল আমিনকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনার খবর পেয়ে কালিয়াকৈর পুলিশ লাশ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সুফিয়া বেগম জানান, গত বুধবার শিক্ষার্থীদের আবেদনের ভিত্তিতে তাদের বিদায়ী অনুষ্ঠান করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তাদেরকে কোনো ধরনের র্যাগ ডে পালনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এই অনুষ্ঠানে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। এর পরে ওই ঘটনার জের ধরে ১টি পক্ষের হামলায় কলেজের ১ ছাত্রকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে এবং আরও ১ ছাত্র আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: কাল হাতিরঝিলে যান চলাচল বন্ধ
কালিয়াকৈর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. জুবায়ের জানান, এই হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তবে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
সান নিউজ/এমএইচ