গাইবান্ধা প্রতিনিধি: ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের সাধারণ নির্বাচনে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ২৬ প্রার্থীর মধ্যে ১৯ জন প্রার্থী প্রদত্ত ভোটের ১৫ শতাংশ না পাওয়ায় তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: কেশবপুরে জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বাষিকী পালন
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রাথমিক বেসরকারি ফলাফল বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের জন্য একজন প্রার্থীকে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অনুকূলে এক লক্ষ টাকা জমা দিতে হয়। আর ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের জন্য জমা দিতে হয় ৭৫ হাজার টাকা।
নির্বাচনী এলাকার প্রদত্ত ভোটের ১৫ শতাংশ ভোট যদি কোনো প্রার্থী না পান, তাহলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। ফলাফলে দেখা যায়, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ৩ লক্ষ ৯৮ হাজার ৫৭৯ জন ভোটের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে মোট প্রদত্ত (কাস্টিং) ভোট ১ লক্ষ ৫৭, শতকরা হিসেবে ২৫.১১ শতাংশ।
জামানত রক্ষায় প্রদত্ত (কাস্টিং) ভোটের ১৫ শতাংশ অনুযায়ী প্রত্যেক প্রার্থীদের পেতে হতো ১৫ হাজার ৯ ভোট।
আরও পড়ুন: সাতবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের উন্মুক্ত বাজেট ঘোষণা
সে হিসেব মোতাবেক চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. সফিউল ইসলাম আলম (আনারস) ২৫১ ভোট, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও দহবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. গোলাম কবির মুকুল (টেলিফোন) ৫৭১৬ ভোট, উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. আখতারুজ্জামান আকন্দ শাকিল (দোয়াত-কলম) ৩০৩৮ ভোট, সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ওয়াহেদুজ্জামান সরকার বাদশা (মোটরসাইকেল) ১১ হাজার ৬২৬ ভোট, সাজ্জাদ হোসেন লিখন (ঘোড়া) ৮৯৭২ ভোট ও মো. এরশাদ আলী সূর্য (ব্যাটারি) প্রতীকে ১৪০৮ পেয়ে জামানত হারাচ্ছেন।
তবে পর্যাপ্ত সংখ্যক ভোট পাওয়ায় খয়বর হোসেন সরকার মওলা (হেলিকপ্টার) ও বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আশরাফুল আলম সরকার লেবুর (কাপ পিরিচ) জামানত রক্ষা হয়েছে। ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১ লক্ষ ৭৫ ভোট পড়েছে। জামানত রক্ষায় প্রার্থীদের পেতে হতো ১৫ হাজার ১১ ভোট।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরা সদরে চেয়ারম্যান হলেন মশিউর রহমান বাবু
সে হিসেবে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ব ম আহসানুল করিম চাঁদ (টিয়া পাখি) ২০১১, উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. আব্দুল্লাহ আল মেহেদী রাসেল (গ্যাস সিলিন্ডার) ৬৪৯২, পৌর যুবলীগের সভাপতি মো. মারুফ হোসেন প্রামাণিক বাদল (চশমা) ১২ হাজার ৩২১, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিএমএম এমিল সাদেকীন (উড়োজাহাজ) ১০ হাজার ২২১, আওয়ামী লীগ নেতা মো. মাহালম মিঞা (টিউবওয়েল) ৮৪৩০, জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মুন্সী মো. আমিনুল ইসলাম সাজু (লাঙ্গল) ১৩ হাজার ৯৩৭, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন- এনডিএম মনোনীত মো. আল শাহাদাৎ জামান জিকো (সিংহ) ৩৭৭২, মহসিন আলী মন্ডল (পালকি) ৮৩৬১, মো. ছামিউল ইসলাম ভূইয়া (আইসক্রিম) ২৩৪৪, মো. শামীম সরদার (বৈদ্যুতিক বাল্প) ৩৮৭৩ ও মো. সাদ্দাম তালুকদার (তালা) প্রতীকে ৬৭৩৯ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১ লক্ষ ৩১ ভোট পড়েছে। সে মোতাবেক জামানত রক্ষায় প্রয়োজন ১৫ হাজার ৫ ভোট।
এতে যুব মহিলা লীগ নেত্রী শ্রীমতি স্বপ্না রানী (ফুটবল) ১২ হাজার ৮৬৮ ও জাতীয় মহিলা পার্টির নেত্রী মোছা. ফেরদৌসী বেগম (বৈদ্যুতিক পাখা) প্রতীকে
১২ হাজার ৮৬৩ ভোট পেয়ে জামানত খোয়ালেন। তবে আল্পনা রানী গোস্বামী (প্রজাপতি) ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান উম্মে সালমা (হাঁস) তাদের জামানত রক্ষা করতে পেরেছেন।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থী মোট কাস্টিং ভোটের ১৫ শতাংশ ভোট পেলে নিয়ম অনুযায়ী জামানত ফিরে পাবেন। যদি ১৫ শতাংশের নিচে কেউ ভোট পান, তাহলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
সান নিউজ/এনজে