নোয়াখালী প্রতিনিধি: ৬ষ্ঠ উপেজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাাপে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ওবায়দুল কাদেরের নিজ এলাকায় নির্বাচন বাতিল ও পুনঃ তফসিলের দাবিতে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন দুই প্রার্থী।
আরও পড়ুন: রংপুরে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানদের শপথগ্রহণ
তারা হলেন- ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই শাহাদাত হোসেন এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল।
বুধবার (২৯ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার ওবায়দুল কাদেরের বাড়ির সামনে দুই প্রার্থী যৌথভাবে এ ঘোষণা দেন।
এ সময় ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই ও চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাদাত হোসেন অভিযোগ করে বলেন, আনারস মার্কার গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুলের পক্ষ নিয়ে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার নেতৃত্বে উনার ছেলে তাসিক মির্জা ও তার ভাগিনারাসহ আমার কর্মী ও এজেন্টদের মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করছি
তারা সকাল সাড়ে ৮ টার মধ্যে সিল মেরে সব ভোট কমপ্লিট করেছে। মেয়র নিজে কেন্দ্রে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট মারার অর্ডার দিয়ে নিজে ভোট দিয়েছেন। গতরাতে আমার সমর্থকদের বাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর, বোমাবাজি ও কুপিয়ে জখম করেছে। এতে অনেক এলাকায় আমার কর্মী ও এজেন্টরা বাড়ি থেকে বের হতে পারেনি।
প্রশাসনকে এ বিষয়ে অভিযোগ জানালেও কোনো প্রতিকার পাইনি। এমতাবস্থায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং নির্বাচন কমিশনারের কাছে ভোট বাতিল ও পুনঃ তফসিল ঘোষণার করার জন্য আবেদন জানাচ্ছি।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল বলেন, এখানে ভোটের পরিবেশ আগেও ছিল না। আমরা স্বাধীনভাবে কোনো মতপ্রকাশ করতে পারি নাই, ভোট চাইতে পারি নাই।
আরও পড়ুন: পানির দাম বাড়াল ওয়াসা
ভোটারদের কাছে যেতে আমাদেরকে বাধা প্রদান করা হয়েছে। এজন্য আমি রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি।
আজ সকালে আমার এজেন্ট যারা কেন্দ্রে গিয়েছে, তাদের এজেন্ট ফরম ছিঁড়ে ফেলেছে, টেবিল ভেঙে প্রত্যেককে মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে। এখন ওপেন সিল মারছে তারা।
ভোটাররা কেন্দ্রে আসার সময় তাদের কুপিয়ে ও মাথা ফাটিয়ে নৌকার মধ্যে ফেলে রেখেছে। তারা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসতে পারছেন না। কিছু কিছু কেন্দ্রে পুলিশ আমাদের ভোটারদের মেরেছে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ গেলেই থাকে না নেটওয়ার্ক
এ অবস্থায় আমরা এ ভোট মেনে নিতে পারি না, চলতে পারে না। এতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৩ বারের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেবের মান-সম্মানে আঘাত করা হয়েছে। উনার উপজেলায় সারারাত বোমাবাজি করা হয়েছে, মানুষকে জখম করা হয়েছে, মানুষ ভোট দিতে পারছে না।
তার ভাতিজা তাসিক ও ভাগিনা রাহাতের নেতৃত্বে ১০/১৫টি অনুমোদনহীন গাড়ি নিয়ে কেন্দ্রে কেন্দ্রে তাণ্ডব চালাচ্ছে। তাই আমি মাননীয় মন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করবো এ ভোট বাতিল করে নতুন করে নির্বাচন দেয়া হোক।
অপরদিকে বাদল অনুসারীদের বিরুদ্ধে ভোট কেন্দ্র চর এলাহী ইউনিয়নের চেয়ম্যান আব্দুর রাজ্জাকের ভাই খোাকনসহ কয়েকজনকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ করেছেন মির্জার অনুসারীরা।
আরও পড়ুন: সোনাসহ কেবিন ক্রু আটক
এ বিষয়ে জানতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার মুঠোফোনে কল দেয়া অপরিচিত এক ব্যক্তি ফোন রিসিভ করে বলেন, মেয়র মহোদয় ব্যস্ত আছেন। এখন কথা বলবেন না।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে লিখিত ও মৌখিক কোনো অভিযোগ আসেনি। আমি নিজেই কোম্পানীগঞ্জে আছি। কয়েকটি কেন্দ্রে তাদের এজেন্টদেরও পেয়েছি। কোথায় কোন কেন্দ্রে অভিযোগ, আমাকে সুস্পষ্টভাবে জানানো হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সান নিউজ/এনজে