জেলা প্রতিনিধি: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় রেমালে রুপ নিয়ে রোববার (২৬ মে) রাত ৮টায় বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত করে। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে গতকাল থেকে সোমবার (২৭ মে) বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বরিশাল, পটুয়াখালী, সাতক্ষীরা, ভোলা, চট্টগ্রামে সর্বমোট ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (২৭ মে) সকালে চট্টগ্রাম জেলার নগরীর বায়েজিদ থানায় টেক্সটাইল এলাকায় দেয়াল চাপায় নিহত হয় সাইফুল ইসলাম হৃদয় নামের ১ পথচারী।
আরও পড়ুন: ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় মানুষের পাশে বিজিবি
স্থানীয়রা বরেন, ঘূর্ণিঝড়ের সময় প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। এ সময় নির্মাণাধীন একটি ভবনের দেয়ালের পাশে আশ্রয় নেয় তিনি। এ সময় হঠাৎ দেয়ালটি ভেঙে পড়লে তার নিচে চাপা পড়ে মারা যান তিনি। এরপর খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস তার লাশ উদ্ধার করেন।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে ভোলায় বসতঘরের নিচে চাপা পড়ে মারা যান মনেজা খাতুন নামের ১ নারী। তিনি ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলার চর উমেদ গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কাদেরের স্ত্রী।
স্থানীয়রা বলেন, রবিবার রাতে মনেজা খাতুন তার ১ নাতিকে নিয়ে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। এরপর ভোরে ঝড়ো বাতাসে টিনের ঘরটি ভেঙে তার নিচে চাপা পড়েন তিনি। এ সময় ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। কিন্তু অক্ষত আছেন তার নাতি। এ ছাড়াও জেলার দৌলতখানে ঘর চাপা পড়ে মাইশা (৪) নামে আর ১ শিশু নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেয়াল ধসে পথচারীর মৃত্যু
অপরদিকে রোববার (২৬ মে) সন্ধ্যায় সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের নাপিতখালি আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে শওকত মোড়ল নামে ১ বৃদ্ধ নিহত হয়। একইদিনের বিকেলে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধূলাসর ইউনিয়নের কাউয়ারচর এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে প্লাবিত এলাকা থেকে বোনকে রক্ষা করতে গিয়ে মো. শরীফুল ইসলাম নামে ১ জনের মৃত্যু হয়।
এই দিকে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ দুর্বল হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে বলে জানায় আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়ার ১৯ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যে, কয়রা ও খুলনায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ বাংলাদেশের উত্তর দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে স্থল গভীর নিম্নচাপ হিসাবে বর্তমানে তা যশোর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এরপর এটি আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমেই বৃষ্টিপাত ঝরিয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হবে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড়ে বিদ্যুৎহীন ২৬ লাখ মানুষ
এই অবস্থায় পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত থেকে নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়। একইসাথে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত থেকে নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়।
সান নিউজ/এমএইচ