নিজস্ব প্রতিবেদক:
মাদারীপুর: শ্বশুরের সঙ্গে পুত্রবধূর সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে বসতঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মিম আক্তার (৬) নামে এক শিশুর শরীর ঝলসে গেছে। শিশুটি বর্তমানে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে দগ্ধ শরীর নিয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে।
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শ্বশুর রাজ্জাক শেখ গা ঢাকা দিয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) ভোরে মাদারীপুর সদর উপজেলার রাস্তি ইউনিয়নের পূর্ব হাজরাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাজ্জাক শেখের ছেলে আসলাম শেখ ছয় বছর আগে মালয়েশিয়ায় যান। এরপর থেকে রাজ্জাক শেখের সঙ্গে পুত্রবধূ সম্পা আক্তারের পারিবারিক বিরোধ চলে আসছিল। রাজ্জাক তার পুত্রবধূ সম্পাকে বাড়ি থেকে অন্যত্র চলে যেতে চাপ দিচ্ছিলেন। কিন্তু সম্পা ছেলে-মেয়েদের নিয়ে বাড়ি ছাড়তে অস্বীকৃতি জানান। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শ্বশুর ও পুত্রবধূর মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল।
শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজ্জাক শেখের মেয়ে বাড়িতে মিস্ত্রি নিয়ে আসেন ভাইয়ের স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েদের ঘর তুলে দিতে। এ সময় রাজ্জাক শেখ ফের তার মেয়ে ও পুত্রবধূকে বাড়িতে ঘর তুলতে বাধা দেন। এ নিয়ে বিকেলে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। রাত তিনটার দিকে হঠাৎ সম্পা ঘরে আগুন দেখে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এসে তাদের উদ্ধার করেন এবং আগুন নিভিয়ে ফেলেন। এ সময় ঘরের মালামালের সঙ্গে শিশু মিমের শরীর পুড়ে যায়। রোববার ভোরে শিশুটিকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সম্পা আক্তার বলেন, ‘অনেকদিন ধরে আমার শ্বশুর আমাদের বাড়ি থেকে চলে যেতে বলছেন। বাড়ি থেকে চলে না গেলে ঘর পুড়িয়ে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছিলেন তিনি। শনিবার রাত ৩টার দিকে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে আমার ঘরে আগুন ধরিয়ে দেন তিনি। এ সময় আমার চিৎকারে আশপাশের মানুষ এসে আমাদের উদ্ধার করে। আমার মেয়েটার পিঠ আগুনে পুরো ঝলসে গেছে।’
রাস্তি ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার গোলাম মাওলা বলেন, ‘পারিবারিক দ্বন্দ্ব চলে আসছিল শ্বশুর ও পুত্রবধূর মধ্যে। এ ঘটনায় শ্বশুর, শাশুড়ি ও পুত্রবধূকে নিয়ে আমরা শতাধিকবার সালিশ করেছি। শ্বশুরকে বহুবার বলেছি। এক পর্যায়ে আমি এসে ঘর তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করি। আগুন দেওয়ার ঘটনাটি খুব দুঃখজনক।’
মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম মিঞা বলেন, ‘আগুনের ঘটনা শুনে আমি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। যার ঘরে আগুন দেওয়া হয়েছে, তিনি বিদেশে থাকেন। বিদেশ থেকে ফোনে আমাদের জানিয়েছেন, এটা পারিবারিক বিষয়। এ ব্যাপারে তাদের কোনো অভিযোগ নেই।’
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নুরুল ইসলাম বলেন, শিশুটিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত শারীরিক অবস্থা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে।
সান নিউজ/পিডিকে/ এআর | Sun News