নিনা আফরিন, পটুয়াখালী: আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে সমুদ্রে মাছ ধরার ওপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা। ইলিশসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের প্রজননকাল হওয়ায় বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন নদীর মোহনা এলাকায় মাছ ধরার ওপর ৬৫ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পুলিশ বক্সে আগুন দিল অবরোধকারীরা
সোমবার (২০ মে) রাত ১২টা থেকে এ নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়ে চলমান থাকবে আগামী ২৩ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত।
মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ায় ইতিমধ্যে ঘাটে ফিরেছে শত শত মাছ ধরার ট্রলার। এ সকল ট্রলারের অধিকাংশই মাছ ছাড়া ঘাটে ফিরে এসেছে। বেশ কয়েকমাস ধরে সমুদ্রে জেলেদের জালে মাছের পরিমাণ কম ধরা পড়ছে বলে জানান স্থানীয় জেলেরা।
রোববার (১৯ মে) পটুয়াখালীর মৎস্যবন্দর আলীপুর-মহিপুর ঘুরে দেখা যায়, শত শত জেলে তাদের ট্রলার ঘাটে রেখে বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কেউ কেউ মাছ ধরার জাল বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন অবসর সময়ে জাল মেরামত করবেন বলে।
আরও পড়ুন: ভবন থেকে পড়ে নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু
এদিকে ৬৫ দিনের অবরোধ শুরু হওয়াতে জেলেরা চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছে বলে জানান স্থানীয় জেলে রুহুল মাঝি। তিনি জানান, বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে বিভিন্ন ধাপে ১৪৭ দিন সমুদ্রে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।
আমাদের পরিবার নিয়ে জীবনযাপনে কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সরকারের তরফ থেকে আমাদের জেলেদের জন্য যে চাল বরাদ্দ করা হয়, তা দিয়ে একটা পরিবারের কিছুই হয় না।
বিগত কয়েকমাস সাগরে মাছ খুব কম পেয়েছি, যা দিয়ে মালিকদের খরচের টাকাই মেটাতে পারিনি। এর মধ্যে এখন আবার ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় পড়লাম। জানি না কীভাবে কী করবো।
বছরে কয়েকবার মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেয়াতে ব্যবসায়ীরাও চরম আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে পড়ছেন বলে জানা যায়।
আরও পড়ুন: শিল্পখাতকে পরিবেশবান্ধব করতে চাই
মৎস্যবন্দর আলিপুরের বাচ্চু ফিসের মালিক আবুল হোসেন কাজী জানান, বাংলাদেশের অন্যতম বড় দুটি মৎস্যবন্দর আলীপুর-মহিপুর। প্রতিদিন এখান থেকে কোটি কোটি টাকার মাছ চালান হয় দেশে এবং দেশের বাইরে।
গত কয়েকমাস ধরে আমাদের ব্যবসায় মন্দা যাচ্ছে। বেশিভাগ ট্রলার মালিক বাজারের টাকার সমমূল্যের মাছ পাননি। এর মধ্যে বছরে ২/৩ বার মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা। সব মিলিয়ে এ পেশা এখন আমাদের জন্য খুব কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবে মৎস্য অধিদফতর মনে করছে, এ সকল নিষেধাজ্ঞা জেলেদের ভালোর জন্যই দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় উদ্বেগ
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, মূলত দুটি কারণে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। প্রজনন সুবিধায় যাতে মাছ নির্বিঘ্নে ডিম ছাড়তে পারে। অপরটি হলো- ছোট মাছকে বড় হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেয়া।
মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা যদি সঠিকভাবে পালন করা হয়, এর সুফল জেলেরাই ভোগ করবেন। তবে জেলেদের যেসকল দাবি রয়েছে, সেসব বিষয় আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করেছি।
সান নিউজ/এনজে