মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ : উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম ধাপে গেল ৮ মে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা নির্বাচনে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে দৈনিক মানবজমিনের জেলা প্রতিনিধি গোলজার হোসেনের উপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠুসহ অন্য আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে সাংবাদিকরা।
আরও পড়ুন : মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ২ আরোহীর
শনিবার (১১মে) দুপুর ১২ টার দিকে মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত অর্ধ-শতাধিক সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধনটি মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে সাংবাদিকরা বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নির্বাচন ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষ করার জন্য যখন দেশের সকল বিভাগ ঐক্যবদ্ধ তখন সাংবাদিকরাও তাদের দায়িত্ব পালনে বদ্ধপরিকর রয়েছেন। কিন্তু এত আয়োজনের মধ্যেও ভোটকেন্দ্র দখলে নেয়ার উদ্দেশ্য হোসেন্দি ইউপি চেয়ারম্যান মিঠু, তার ভাই সরকারি কর্মকর্তা ডা. ইকবাল হক তপন ও তাদের ভাতিজা তানভির হক তুরিন হোসেন্দি ইউনিয়নের ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবল সোহেল রানার উপর হামলা করেন। সেই দৃশ্য চিত্র ধারণ করায় মিঠু গং সাংবাদিক গোলজার হোসেনকে অবরুদ্ধ করে তাকে মারধর করেন। এ ঘটনায় মামলা হলেও ২ দিনেও কোন আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
আরও পড়ুন : গুলিবিদ্ধ আ’লীগ নেতার মৃত্যু
সাংবাদিকরা বলেন, 'পুলিশের উপস্থিতিতে এত কিছু ঘটে গেলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আচরণ ছিলো বিস্ময়কর।' তাদের সহকারীদের উপর হামলা হলেও রক্ষায় কোন তাক্ষণিক পদক্ষেপ নেয়নি। ঘটনার সময় ওই ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বরত সকল পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার দাবি করেন সাংবাদিকরা।
এ সময় সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে সাংবাদিকরা বলেন, একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়েও আচরণবিধি লঙ্ঘন করে কিভাবে মিঠুর ভাই গাজীপুর আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ইকবাল হক স্বপন নির্বাচনে কোন প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নেন। কেন্দ্র দখলের উদ্দেশ্যে পুলিশ ও সাংবাদিকের উপর হামলা করেন তা আমাদের বোধগম্য নয়।
আরও পড়ুন : রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যুববকে হত্যা
প্রসঙ্গত, গেল ৮ মে গজারিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দিন সকাল ৯ টার দিকে হোসেন্দী ইউনিয়নের ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র পুলিশ ও সাংবাদিকের উপর হামলা হয়। পরে দ্বিতীয়বার হোসেন্দি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে পুলিশ ও সাংবাদিকের উপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় হোসেন্দি ইউপি পরিষদ চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠুকে প্রধান আসামি করে পরদিন (৯ মে) পৃথক পুলিশ ও সাংবাদিক বাদী হয়ে পৃথক দুই'টি মামলা রুজু করে গজারিয়া থানায়। মামলা দায়েরের পর ২ দিন পেরিয়ে গেলেও একজনকে ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
সান নিউজ/এমআর